উত্তর আর দক্ষিণ, দুই কোরিয়ার শাসককেই আজ অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ঐতিহাসিক বৈঠকের পরে চব্বিশ ঘণ্টাও পেরোয়নি। উত্তর কোরিয়ার সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিল, এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শান্তির এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমও দু’দেশের নেতাদের এই উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে হাঁটার যে বার্তা কাল দু’দেশ দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। উত্তর আর দক্ষিণ, দুই কোরিয়ার শাসককেই আজ অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
কোরীয় যুদ্ধ ও তার পরবর্তী তিক্ততা ভুলে দীর্ঘ ৬৫ বছর পরে দক্ষিণের মাটিতে কাল পা রেখেছিলেন উত্তরের কোনও শাসক। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের হাত মেলানোর ছবি দুই কোরিয়ার খবরের কাগজেই আজ ফলাও করে বেরিয়েছে। কাল পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কিম যে ঘোষণাপত্রে সই করেছেন, উত্তরের সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ আজ সেই পূর্ণাঙ্গ বক্তব্যই তাদের কাগজে ছাপিয়েছে। এই ঘোষণা একতা, শান্তি আর উন্নয়নের রাস্তা খুলে দেবে বলেও জানিয়েছে ওই সংবাদ সংস্থা।
উত্তর কোরিয়ার শাসক দলের মুখপত্রেও আজ ঐতিহাসিক বৈঠককেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রডং সিনমুন নামে ওই কাগজের ছ’টি পাতার প্রথম চার পাতাতেই বৈঠকের খবর। কাল দু’দেশের নেতাদের সাক্ষাতের মোট ৬০টি ছবিও ছাপিয়েছে তারা। শুধু প্রথম পাতাতেই নেওয়া হয়েছে মোট ১৫টি ছবি। জাতীয় টিভি চ্যানেলে কিমের সই করা ঘোষণাপত্র পড়ে শুনিয়েছেন দেশের সবচেয়ে বর্ষীয়ান সংবাদপাঠক রি চুন হি।
পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে ঘোষণা পত্রে কিম সই করলেও এ নিয়ে তাঁর সরকার কী কী পদক্ষেপ করতে চলেছে, তা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। তবে পড়শি দক্ষিণ কোরিয়া অবশ্য মোটামুটি আশ্বস্ত যে, পরমাণু ভাণ্ডার কমানোর বিষয়টি নিয়ে কিম এ বার সত্যিই দায়বদ্ধ। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমেও আজ এই মর্মেই সব খবর প্রকাশিত হয়েছে।
কিম আর মুনের প্রশংসা শোনা গিয়েছে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখেও। জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল আমেরিকায়। তাঁর সঙ্গেই হোয়াইট হাউসে আজ একটি যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দুই কোরিয়ার ঐতিহাসিক বৈঠক নিয়ে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দক্ষিণ আর উত্তর কোরিয়ার ঐতিহাসিক বৈঠকের জন্য দু’দেশকেই আমি অভিনন্দন জানাতে চাই। কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন আর কিম জং উন যে দায়বদ্ধতা দেখিয়েছেন, তা দেখে আমরা উৎসাহী। আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কিম জং-উনের সঙ্গে আমি বৈঠকে বসতে চলেছি। আমি আশাবাদী, সেই বৈঠকও ফলপ্রসূই হবে।’’ সেই সঙ্গেই ট্রাম্পের সংযোজন, ‘‘অনেকগুলো দশক সময় লেগে গেল। দেখা যাক এর পর কী হয়।’’ দুই কোরিয়ার নেতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর মের্কেলও।