দূষণে জেরবার লাহোর। ছবি: রয়টার্স।
আর্থিক সঙ্কটের সঙ্গে যুঝছে পাকিস্তান। খাদ্যসঙ্কটও দেখেছে ভারতের প্রতিবেশী এই দেশ। এ বার স্বাস্থ্য ‘সঙ্কটের’ মুখে পাকিস্তানের একাংশ। দূষণে জেরবার গোটা পাকিস্তান। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি লাহোরে। এই শহরে বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) ১৯০০। যা অতি অতি ভয়ানক।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূষণ আর ধোঁয়ার কারণে এই শহরে প্রতি মুহূর্তে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে শিশু থেকে বয়স্কদের ভিড় বাড়ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক দিনে ১৫ হাজার মানুষকে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে রোগীদের ভিড়। ফলে স্বাস্থ্যসঙ্কটের মুখে লাহোর।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা, নিউমোনিয়া এবং বুকে সংক্রমণের মতো উপসর্গ বাড়ছে। আর সেই উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। সরকারি হাসপাতালগুলির অবস্থা শোচনীয়। দূষণের জেরে মেয়ো হাসপাতালে ভর্তি ৪০০০ রোগী। জিন্নাহ হাসপাতালে ৩৫০০, গঙ্গারাম হাসপাতালে ৩০০০ এবং শিশু হাসপাতালে ২০০০। পাকিস্তানের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ আশরফ জিয়া লাহোরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সে দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, সরকারের এখনই উচিত দূষণের উৎসগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা। ইতিমধ্যেই লাহোরে ইটভাটার কাজ, নির্মাণ সংক্রান্ত কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যানবাহন চলাচলের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় না নামানোর জন্য শহরবাসীর কাছে আবেদন করছে প্রশাসন।
পরিস্থিতি না শোধরানো পর্যন্ত স্কুল, কলেজগুলি বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের উপরেও তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের যুক্তি, বিয়ের অনুষ্ঠানে শব্দবাজি, আতশবাজি পোড়ানো হয় দেদার। এর জেরে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই আপাতত তিন মাস বিয়ের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে গত এক মাসে ২০ লক্ষ মানুষ শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পাকিস্তানের সংবাদপত্র ‘ডন’-এর প্রতিবেদন বলছে, পঞ্জাব প্রদেশে গত এক মাসে দূষণের জেরে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ১৯ লক্ষ ৩৪ হাজার ৩০।