প্রথম থেকেই মাস্ক পরায় অনীহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। অথচ দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি চাপের মুখে পড়ে মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা মেনে নিলেও, বাস্তবে ট্রাম্প রয়েছেন ট্রাম্পেই। বুধবার হোয়াইট হাউসে মাস্ক ছাড়াই সাংবাদিকদের মুখোমুখি প্রেসিডেন্ট ও তাঁর আধিকারিকেরা। এপি
মার্কিন মুলুকে করোনা অতিমারি মোকাবিলার নীতি নির্ধারক তিনি। সেই ভাইরাস বিশেষজ্ঞ তথা চিকিৎসক অ্যান্টনি ফাউচিকে কেন তাঁর থেকে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে নিজের অসন্তোষ গোপন রাখলেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আক্ষেপ, ‘‘আমাকে কেউই পছন্দ করে না!’’
কোভিড-১৯-এর হানায় এই কয়েক মাসে দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে আমেরিকায়। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। মাস্ক পরাকেও গুরুত্ব দিতে চাইছেন না তিনি। যার জেরে আপাতত চারটি প্রদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সমীক্ষা বলছে, সংক্রমণ মোকাবিলায় ট্রাম্পের ব্যর্থতার জেরে তাঁর জনপ্রিয়তা কমছে। উল্টে হু হু করে বাড়ছে তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী, ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের জনপ্রিয়তা। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে ফাউচির বাতলে দেওয়া নীতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন অধিকাংশ আমেরিকাবাসী। অনেকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁকে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এখনও দাবি করছেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কাজে দিচ্ছে। অথচ কয়েক সপ্তাহ আগেই দেশের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অথরিটি (এফডিএ) এই ওষুধ ব্যবহারের নির্দেশ প্রত্যাহার করেছে। কারণ অনেকগুলি গবেষণা একসঙ্গে জানিয়েছে, এই ওষুধে হৃৎপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের অবশ্য তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। তাঁর বক্তব্য, ফাউচি ও তাঁর দলের থেকে তাঁর প্রশাসনের বেশি প্রশংসা প্রাপ্য। আর সেটা হচ্ছে না কারণ, ট্রাম্পের মতে হয়তো তাঁর ব্যক্তিত্বের জন্যই তাঁকে কেউ পছন্দ করেন না।
এই পরিস্থিতিতে ফের একটি বিতর্কিত ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন ট্রাম্প, যা নিয়ে ফের হইচই শুরু হয়েছে। ভিডিয়োটিতে এক দল চিকিৎসক সুপ্রিম কোর্টের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে নিজেদের প্রথম সারির কোভিড-যোদ্ধা বলে দাবি করছেন। তাঁরা বলছেন, এই সংক্রমণ মোকাবিলায় মাস্কের প্রয়োজন নেই। দরকার নেই লকডাউনেরও। প্রথমে ট্রাম্পপুত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ভিডিয়োটি শেয়ার করেন। পরে রিটুইট করেন প্রেসিডেন্টও। বিতর্কিত মন্তব্য থাকায় সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলি ভিডিয়োটিকে হয় ডিলিট করেছে, নয়তো সীমিত করেছে। পরে ওই ভিডিয়ো ডিলিট করেছেন প্রেসিডেন্টও।