মুলার রিপোর্ট প্রকাশের দাবি

ট্রাম্প বলছেন, পুরো রেহাই! ক্ষুব্ধ ন্যান্সিরা

এই রিপোর্টে কী রয়েছে, তা নিয়ে গত কাল দিনভরই জল্পনা চলেছে। রবিবার এই রিপোর্টের সারমর্ম মার্কিন কংগ্রেসের কাছে পেশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম পি বার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা 

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৫
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- রয়টার্স

বিশেষ আইনজীবী রবার্ট মুলারের তদন্ত-রিপোর্ট জানিয়েছে, আমেরিকার ভোটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ যোগসাজশের প্রমাণ মেলেনি। এ দিক থেকে তাই তাঁকে ‘অপরাধী’ বলা যাবে না। তবে প্রেসিডেন্টকে পুরোপুরি ছাড়ও দেওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

এই রিপোর্টে কী রয়েছে, তা নিয়ে গত কাল দিনভরই জল্পনা চলেছে। রবিবার এই রিপোর্টের সারমর্ম মার্কিন কংগ্রেসের কাছে পেশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম পি বার। তার পর থেকে শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে ঘোষণা করেছেন, ২০১৬-র ভোটে রুশ হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ উঠেছিল, তা থেকে পুরোপুরি রেহাই পেয়েছে তাঁর প্রচার দল। ট্রাম্পের বক্তব্য, ‘‘রাশিয়ার সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগই ছিল না। কোথাও কোনও বাধা সৃষ্টি করাও হয়নি। তাই পুরোপুরি ছাড়।’’ এর পরে প্রেসিডেন্টের সংযোজন, ‘‘দেশকে এই রকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হল, এটাই লজ্জার। আমাদের ছোট করার জন্য একটা বেআইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল, সেটা ব্যর্থ হয়েছে।’’

মুলারের রিপোর্টের যে নির্যাস অ্যাটর্নি জেনারেল বার কংগ্রেসে পাঠিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে— ‘‘২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সার্ভার হ্যাক করার অভিযোগ উঠেছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের ক্ষতি করার লক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর মতো অভিযোগও ছিল। তবে এই সংক্রান্ত কোনও কাজের সঙ্গেই ট্রাম্পের প্রচার দলের কোনও সদস্য জড়িত ছিলেন না। রুশ সরকারের সঙ্গে ষড়যন্ত্র, সহযোগিতা অথবা যোগাযোগ রাখা— ট্রাম্পের প্রচার দলের কারও ক্ষেত্রেই এই অভিযোগ খাটে না বলে জানিয়েছেন বিশেষ আইনজীবী।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু এর পাশাপাশিই বার জানিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়ায় বাধাদান (যে অভিযোগ উঠেছিল প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে) সংক্রান্ত যে সব প্রমাণ হাতে এসেছে, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছননি বিশেষ আইনজীবী মুলার। বার বলেছেন, ‘‘এই প্রসঙ্গেই মুলার লিখেছেন, রিপোর্টে যেমন প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি, তেমনই আবার পুরোপুরি ছাড়ও দেওয়া হয়নি।’’

বার বলছেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রোজ়েনস্টাইনের সঙ্গে কিছু তথ্য খতিয়ে দেখে তাঁর মনে হয়েছে, মুলারের তদন্তে ট্রাম্পের বারবার হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা আদৌ বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধাদানের মতো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে কি না, তা প্রমাণ করতে হলে ওই সব তথ্য যথেষ্ট নয়। ২২ মাস তদন্তের পরে হোয়াইট হাউসের উপর থেকে অভিযোগের মেঘ সরল বলে মনে করছেন মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্স।

যদিও ট্রাম্পকে পুরোপুরি ছাড় দেওয়া হয়নি, এই যুক্তি দেখিয়ে মুলারের রিপোর্ট দ্রুত প্রকাশ করার দাবি তুলেছেন ডেমোক্র্যাটরা। হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং সেনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘মুলারের রিপোর্ট বিচারে বাধাদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ থেকে ট্রাম্পকে ছাড় দেয়নি। তাই বোঝাই যাচ্ছে, এই রিপোর্ট দ্রুত প্রকাশ্যে আনা কতটা জরুরি।’’ পেলোসিদের আরও অভিযোগ— অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারকে মাত্র কয়েক মাস আগেই নিয়োগ করেছেন ট্রাম্প। উনি মোটেই ‘নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক’ নন। ট্রাম্প অবশ্য জানিয়েছেন, মুলার রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও তাঁর কোনও আপত্তি নেই।

মুলারের রিপোর্টের সারমর্ম থেকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়াও। মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ তারা প্রথম থেকেই অস্বীকার করে এসেছে। আজ ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেছেন, ‘‘আমরা রিপোর্ট দেখিনি। আমাদের অবস্থান একই আছে। আমরা কোনও দেশের নির্বাচনেই হস্তক্ষেপ করিনি।’’ রুশ প্রশাসনের বক্তব্য, আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের ফের উন্নতি ঘটতেই পারে, তবে ওয়াশিংটনই প্রথমে পদক্ষেপ করুক, চায় মস্কো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement