ট্রাম্প রানির পিঠে চাপড় দেন, এমন ছবি শেয়ার হয় টুইটারে।
রানির দেশে আসার পর থেকে একের পর এক ‘কাণ্ড’ ঘটিয়ে শিরোনামের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অবশ্য স্বকীয় কায়দায় সবেতেই ‘অবিচল’।
সোমবার বাকিংহাম প্রাসাদে রাজকীয় নৈশভোজে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের পিঠে হাল্কা চাপড় মারতে দেখা গিয়েছে ট্রাম্পকে। আর যায় কোথায়! সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই আচরণের ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কি ব্রিটেনের রাজপরিবারের প্রোটোকল ভঙ্গ করলেন না?
৯৩-এ পৌঁছনো রানির প্রশংসায় ওই নৈশভোজে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন ৭২ ছোঁয়া ট্রাম্প। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে রানির কঠোর পরিশ্রম, আমেরিকা-ব্রিটেনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক— সবই উল্লেখ করেছিলেন ট্রাম্প। দিব্য এগোচ্ছিল অনুষ্ঠান। কথা শেষ হতে উঠে দাঁড়ান ট্রাম্প। তার পরেই রানির পিঠে সেই হাল্কা চাপড়। রানি অবশ্য তাতে একেবারেই নির্বিকার ছিলেন। কিন্তু তাতে বিতর্ক থামেনি। একটি ব্রিটিশ পত্রিকা জানিয়েছে, রানিকে স্পর্শ করার বিষয়টি বরাবরই নিয়ম-বহির্ভূত। রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করতে হবে, তার অলিখিত কিছু নিয়ম আছে। এটিও তার মধ্যে পড়ে।
এখানেই শেষ নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তিন দিনের সফরে ছড়িয়েছেন আরও ‘মণিমুক্তো।’ গত বারের সফরে উইনসরে গিয়ে রানিকে ট্রাম্প উপহার দিয়েছিলেন একটি ঘোড়ার মূর্তি। এ বার রানি সেই মূর্তিটি দেখান ট্রাম্পকে। জিজ্ঞেস করেন, ‘‘কিছু কি মনে পড়ছে?’’ কিছুটা ‘বিব্রত’ দেখায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে, বলে ওঠেন, ‘‘না।’’ ব্রিটিশ পত্রিকা সূত্রেই খবর, মূর্তিটা দেখে ট্রাম্পের কিছুই মনে না পড়ায় ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া এগিয়ে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। মূর্তির দিকে তাকিয়ে মেলানিয়াই বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, এটা আমরাই রানিকে দিয়েছিলাম।’’ এই বিষয়টি নিয়ে ঠাট্টা-সমালোচনার জোয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ লিখেছেন, ‘‘বিশ্ব জুড়ে সব বিবাহিত দম্পতির মতোই ব্যাপারটা হয়েছে। স্ত্রী উপহার নিয়ে এসে দিলেন। স্বামী কিছুই জানেন না! আমার ধারণা অনেকেই এটা বুঝবেন।’’ আর এক জন ক্ষুব্ধ হয়ে লিখেছেন, ‘‘আমেরিকার করদাতারা ব্রিটেনের রাজপরিবারকে গাদা গাদা উপহার দেওয়ার জন্য অর্থ দেয় না। ওদের আর কিছুর দরকার নেই। আমাদের দেশের অর্থ ভাল কাজে ব্যয় করুন। যত্ত পাগলের কারবার!’’
ট্রাম্প অবশ্য এ সবে কর্ণপাত করে একেবারেই সময় নষ্ট করছেন না। তিনি মহা উৎসাহে টুইট করছেন, ‘‘লন্ডন সফর দারুণ হচ্ছে। রানি আর রাজপরিবারের সবাই অসাধারণ। ব্রিটেনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভীষণ মজবুত। বিরাট সংখ্যক শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সাধারণ মানুষ রয়েছেন, যাঁরা আমাদের দেশকে ভালবাসেন।’’
আর ব্রিটেন জুড়ে তাঁর বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভের প্রস্তুতি চলছে? টুইটেই ট্রাম্পের জবাব, ‘‘এখনও কোনও বিক্ষোভ দেখিনি তো। ভালবাসাই পাচ্ছি শুধু। তবে আমি নিশ্চিত ভুয়ো খবরের বাহিনী
ওদের (বিক্ষোভকারীদের) ঠিক খুঁজে বার করবে!’’