মুখোমুখি: শনিবার বৈঠকের আগে ট্রাম্প ও চিনফিং। এএফপি
জি-২০ বৈঠকের ফাঁকে আলোচনায় বসার আগে পর্যন্ত হুঁশিয়ারি ছিল দু’দিক থেকেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, আমদানি শুল্ক বসতে পারে চিন থেকে তাঁদের দেশে আসা সব পণ্যের উপরে। আর পাল্টা শুল্ক বসানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে চিন জানিয়ে দিয়েছিল, দু’পক্ষকেই কিছুটা করে পিছু হটতে হবে। না হলে সন্ধি অসম্ভব। শনিবার অবশ্য চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে ট্রাম্প জানালেন, শুল্ক-যুদ্ধের সমাধানে ফের বৈঠক শুরু হবে। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নতুন করে আমদানি শুল্ক না চাপানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে আমেরিকা।
বৈঠকের পরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমাদের খুব ভাল বৈঠক হয়েছে। আমি তো বলব দুর্দান্ত!’’ সাংবাদিক বৈঠকে চিনের মোবাইল সংস্থা হুয়েই নিয়েও সুর নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনার আগেই বিশেষজ্ঞেরা বলেছিলেন, এই বৈঠকে নির্দিষ্ট কোনও সমঝোতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। কিন্তু যদি পরস্পরের পণ্যের উপরে নতুন করে আমদানি শুল্ক না চাপানোর ব্যাপারে তাঁরা সম্মত হন, তা হলেই বৈঠক সফল হয়েছে বলতে হবে। উল্লেখ্য, আমেরিকা ও চিনের মধ্যে শুল্ক-যুদ্ধ নিয়ে গত এক বছর ধরে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহল। শুল্ক-যুদ্ধ এবং ব্রেক্সিটের ধাক্কায় সারা বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদেরা। ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে চিন-সহ কয়েকটি দেশের বৃদ্ধি ধাক্কা খাওয়ারও।
বৈঠকের আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি চিনের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক চুক্তির’ দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। পাশাপাশি চিনও জানায়, বাণিজ্য নিয়ে দ্বন্দ্ব না বাড়িয়ে ফের আলোচনা শুরু করা উচিত। তা হবে অনেক বেশি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আজকের বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে জানা যায়নি। কিন্তু বৈঠকের পরে চিন সাময়িক ভাবে হলেও স্বস্তিতে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকেও আলোচনার দরজা খুলেছে। ঠিক হয়েছে, বাণিজ্য নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা হবে দু’দেশের মধ্যে। বস্তুত জি-২০ বৈঠকের শেষেও আজ যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেখানেও বাণিজ্যের সমস্যার ফলে আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা খাওয়া নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।