করোনা আক্রান্ত কিনা শুঁকেই বলে দেবে কুকুর। ফাইল চিত্র ।
এখন থেকে আপনার শরীরে করোনা ভাইরাস বাসা বেঁধেছে কি না, তা খুঁজে বার করতে পারবে কুকুর! শুনে অবাক হচ্ছেন তো? অবাক হওয়ার কিছু নেই। আদপেই সম্ভব হচ্ছে এই বিষয়টি।
গন্ধ শুঁকে বোমা ও মাদক চিনতে দীর্ঘদিন ধরে কুকুরের ব্যবহার হয়ে আসছে। নির্দিষ্ট ধরণের ক্যানসার, ডায়াবেটিস এবং এমনকি পারকিনসন্স রোগও শুঁকে চিহ্নিত করতে কুকুরের ব্যবহার করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কোনও পরীক্ষা বা রাসায়নিক জড়িত থাকে না। কুকুরের কোনও জিনিস শুঁকে চিহ্নিত করার এই প্রক্রিয়াকে ‘বায়োডিটেকশন’ বলা হয়।
২০২০ সালে, করোনা অতিমারি আঘাত হানার পরেই বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরা সার্স-কোভ-২ ভাইরাস শুঁকতে কুকুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। এবং প্রথম দিকেই সাফল্যের মুখ দেখেন তাঁরা।
আমেরিকার ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই) জানিয়েছে, কুকুর তাদের অত্যন্ত সংবেদনশীল ঘ্রাণশক্তির জন্য পরিচিত। যখন কেউ অসুস্থ হয়, তখন মানবদেহ নির্দিষ্ট উদ্বায়ী জৈব যৌগ নির্গত করে। যা গ্যাস হিসাবে নির্গত হয়। এবং প্রতি সংক্রমণে একটি নির্দিষ্ট গন্ধ থাকে। সুতরাং, যাঁদের শরীর থেকে কোভিড সংক্রামিত হওয়ার পরে নির্দিষ্ট উদ্বায়ী জৈব যৌগ নির্গত হয়, তাঁদের শরীর থেকে একটি স্বতন্ত্র গন্ধ বেরোয়। এই বিশেষ গন্ধটি ‘বায়োডিটেকশন’-এর মাধ্যমে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
বিমানবন্দরগুলি এই শনাক্তকরণ পদ্ধতির জন্য আদর্শ জায়গায় পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে এই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা শুরু হয়েছে। লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ফিনল্যান্ডে এই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা প্রথম শুরু হয়। এনসিবিআই জানিয়েছে, ফিনল্যান্ড এবং লেবাননে পরিচালিত পরীক্ষাগুলির ক্ষেত্রে করোনা পজিটিভদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয় কুকুর। আমেরিকার মায়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৮ শতাংশ সাফল্য পাওয়া যায় বলেও এনসিবিআই জানিয়েছে ।
এর পর থেকেই করোনা চিনতে স্নিফিং কুকুর মোতায়েন করা জায়গার সংখ্যা বাড়ছে। দুবাইয়ের পুলিশ ৩৮টি স্নিফার কুকুরের একটি বিশেষ ইউনিট গঠন করেছে, যা ৯২ শতাংশ নির্ভুলভা বে মানুষের ঘামের নমুনা থেকে কোভিড শনাক্ত করতে পেরেছে বলে দাবি।