ব্রিটিশ রাজপরিবারের আভিজাত্যের প্রতীক টাওয়ার অব লন্ডন। এই টাওয়ার পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু এই টাওয়ারের মূল আকর্ষণ হল বেশ কয়েকটি কাক।
এই টাওয়ারের অন্যতম বাসিন্দা আটটি পাখি। ১১০০ সাল থেকে একটা ‘মিথ’ চলে আসছে, কাকগুলি টাওয়ার ছেডে় গেলেই ভেঙে পড়তে পারে দুর্গ। নেমে আসতে পারে অভিশাপ।
এই জন্য কাকদের দেখাশোনা অত্যন্ত জরুরি রাজপরিবারের কাছে। এদের দেখাশোনা করার জন্য আছেন র্যাভেন মাস্টার অর্থাৎ ওয়ার্ডেন। বর্তমান র্যাভেন মাস্টার ক্রিস্টোফার স্কেইফ। ১১ বছর ধরে এই কাকগুলির দেখাশোনা করছেন তিনি।
এই র্যাভেন মাস্টার কিন্তু রীতিমতো সেলেব্রিটি। মাথায় হ্যাট, লাল কোট পরে দিব্যি খোশমেজাজে থাকেন এই প্রাক্তন মেশিন গানার, মন দিয়ে দেখভাল করেন কাকগুলির। কিন্ত কী খেতে দেন?
ইঁদুর ছাড়াও স্মিথফিল্ড বাজার থেকে কেনা ছোট মুরগীর ছানা বা মাছ ছাড়াও রক্তমাখানো বিস্কুটও রয়েছে এই তালিকায়। প্রিয় পোষ্য মার্লিনাকে খাওয়াতে খাওয়াতে বললেন, ‘দে আর ওয়াইল্ড, বাট হিউম্যানাইজড, দে আর ফ্রি, বাট নট ফ্রি।’
সকালে উঠে একই সময়ে পাখিগুলিকে খাওয়ান ক্রিস্টোফার। এমনকি কখনও কখনও সূর্যোদয়ের আগেই উঠে পড়েন। সারাজীবন ধরে এদের নিয়েই থাকতে চান, বলেন এমনটাও।
রাতে খাঁচায় রাখা হয় কাকগুলিকে। কারণ ২০১৩ সালে দুটি কাককে শিয়াল খেয়ে গিয়েছিল।
র্যাভেন মাস্টার বলেন, পোষ্যগুলি পট্যাটো চিপস ভালবাসে, কিন্তু পেঁয়াজ খায় না। এক দু’বার নাকি এদের ঠোক্করও খেয়েছেন কেউ কেউ। একটা বাচ্চার থেকে স্যান্ডউইচও কেড়ে নিয়েছিল নাকি একটি কাক। তবে সবচেয়ে ভালবাসে হাত থেকে কয়েন কেড়ে নিতে!
পোষ্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর ফাঁকে ‘মাই লাইফ উইথ দ্য র্যাভেনস অ্যাট দ্য টাওয়ার অব লন্ডন’ নামে বইও লিখেছেন ক্রিস্টোফার স্কেইফ।
স্কেইফ ‘ভিক্টোরিয়ান মেলোড্রামা’ লিখতে চান, জানান এমনটাই। ‘গ্রেভ ম্যাটারস’ নামে একটা ফেসবুক পেজও চালান তিনি। যেখানে রাজপরিবারের নানা ঘটনা শেয়ার করেন তিনি।
এমনই ক্রেজ এই কাকগুলির, যে ফেসবুক পেজেই একজন লিখেছিলেন, মৃত্যুর পর চক্ষুদান করতে চান র্যাভেনদেরই।