চোখের সামনে দেখেছিলেন বন্ধু নেলসন ম্যান্ডেলার জীবনের শেষ ক’টা দিন। জীবনী শক্তি ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও একাধিক জটিল, যন্ত্রণাময় পদ্ধতিতে যান্ত্রিক ভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে। মেনে নিতে পারেননি ডেসমন্ড টুটু। প্রাক্তন আর্চবিশপ জানালেন, জীবনের মতোই মৃত্যুর ক্ষেত্রেও সমান মর্যাদা থাকা উচিত। তাই স্বীকৃতি দেওয়া উচিত নিষ্কৃতি-মৃত্যুকে।
বিশ্বের অন্যতম ক্যাথলিক ধর্মনেতা, ৮২ বছর বয়সি ডেসমন্ড টুটুর এই মতামতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে বিশ্বে। ‘অবজার্ভার’ পত্রিকার একটি প্রবন্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা জানিয়েই তাঁর মত, মানুষের নিজের জীবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত না নিতে দেওয়ার আইন প্রকৃতপক্ষে এক ধরনের বাধা।
ডেসমন্ডের এই বক্তব্যের পটভূমিতে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিষ্কৃতি-মৃত্যু নিয়ে ছড়িয়ে পড়া বিতর্ক। যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। আগামী শুক্রবার অর্থাৎ ‘ম্যান্ডেলা ডে’-তে লন্ডনের ‘হাউস অব লর্ডস’-এ প্রাক্তন চ্যান্সেলর লর্ড ফ্যালকনার নিষ্কৃতি-মৃত্যু সংক্রান্ত বিলটি পেশ করবেন। বিষয়টি নিয়ে মতামত রাখার জন্য এখনও পর্যন্ত ১১০ জন নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন, যে সংখ্যাটা ছুঁয়েছে রেকর্ড মাত্রা।
ডেসমন্ড লিখেছেন, “ম্যান্ডেলা ডে-তে আমরা এক মহান ব্যক্তিত্বকে স্মরণ করব। ওয়াশিংটন, কিউবেক, নেদারল্যান্ডস, সুইৎজারল্যান্ড ইতিমধ্যেই নিষ্কৃতি-মৃত্যুকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মৃত্যুর মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়কে মর্যাদা দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কড়া সংবিধানেও বদল আনতে হবে।” নিজের মৃত্যু নিয়েও অকপট ডেসমন্ড। তাঁর কথায়, “কৃত্রিম ভাবে নিজের জীবনটাকে দীর্ঘতর করার পক্ষপাতী নই আমি।”
তবে এর সবটাই ডেসমন্ডের ব্যক্তিগত মতামত। গির্জার মতামত অন্য হতেই পারে, এ কথাও জানিয়েছেন তিনি।