অভিবাসীদের সুবিধা, তবু পাত্তা পেলেন না ট্রাম্প

সুদ কমার আশায় চাঙ্গা হয় শেয়ার বাজার। যেমন হয়েছে গত মঙ্গলবার। ওই দিন সেনসেক্স এক লাফে বাড়ে ৪৬৫ পয়েন্ট।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৪৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

চিঁড়ে ভিজল না এ বারও।

Advertisement

‘আপনারা আমাকে প্রাচীর তোলার জন্য ৫৭০ কোটি ডলার দিন, আমি অনথিভুক্ত শরণার্থীদের ফেরত পাঠাব না। বরং সাময়িক সুরক্ষা দেবো’— এক মাস ছুঁতে চলা শাট ডাউন তুলতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ বারের প্রস্তাব ছিল এটাই। ডেমোক্র্যাটরা সপাটে ফিরিয়ে দিলেন সেটাও। ট্রাম্পের উদ্দেশে তাঁরা বললেন, আগে সরকার চালু হোক, তার পরে অভিবাসন নিয়ে আলোচনা-মীমাংসা শুরু হবে।

হোয়াইট হাউস থেকে টেলিভিশন বিবৃতিতে এই প্রস্তাব দিয়ে ট্রাম্প উল্লেখ করলেন ‘ড্রিমার’দের কথা। তাঁর প্রস্তাবমতো, শৈশবে যাঁরা বাবা-মায়ের সঙ্গে অবৈধ ভাবে আমেরিকায় ঢুকেছিলেন, এমন ৭ লক্ষ তরুণকে (ড্রিমার) তিন বছর পর্যন্ত প্রত্যর্পণের মুখোমুখি হতে হবে না। ‘ডাকা’-র (ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস) সুবিধা পান যাঁরা, সাময়িক ভাবে তাঁদের কাজের অনুমতি, সামাজিক নিরাপত্তাও দেওয়া হবে। এমনিতে ‘ডাকা’-র জেরে প্রত্যর্পণ এড়াতে ড্রিমারদের চুক্তি দু’বছর অন্তর পুনর্নবীকরণ হয়। ট্রাম্পের প্রস্তাব, এই সাময়িক সুরক্ষার মেয়াদ বাড়িয়ে তিন বছর করা হবে। যার অর্থ, যে ৩ লক্ষ শরণার্থীর প্রত্যর্পণ রোখার মেয়াদ এখন উত্তীর্ণ হওয়ার মুখে, তাঁরা আরও তিন বছর নিশ্চিন্তে আমেরিকায় থাকতে পারবেন। মার্কিন কংগ্রেস তত দিনে অভিবাসন প্রশ্নে কোনও একটা সিদ্ধান্তে নিশ্চয়ই পৌঁছে যাবে বলে মনে করেন ট্রাম্প।

Advertisement

এ ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা হিংসার কারণে যাঁরা দেশছাড়া, তাঁদেরও এই সুরক্ষা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াতে আরও কিছু পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন তিনি। সুরক্ষায় আরও কড়াকড়ির কথা জানিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য, তিনি এমন একটা প্রস্তাব দিচ্ছেন, যা অনেকটাই বাস্তববাদী আপসের পথ—ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান, দু’পক্ষই সেটা বুঝবে বলে দাবি প্রেসিডেন্টের। তাঁর মতে, বিশ্বাস এবং সদিচ্ছা থাকলে অভিবাসন নিয়ে প্রকৃত সংস্কারের পথে এগোনো সম্ভব। অচলাবস্থা শেষ করতে তিনিও চেষ্টা করছেন জানিয়ে ট্রাম্পের সংযোজন, ‘‘ওয়াশিংটনে দু’পক্ষকেই একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।’’

বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘সেই চরম অবস্থান (যারা আপসে ভয় পায় এবং খোলা সীমান্ত চায়) থেকে আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতে হবে। খোলা সীমান্ত মানে অবাধে মাদক আর মানুষ পাচার। সঙ্গে ধরে নিন, আরও অসংখ্য অপরাধ।’’ এই প্রসঙ্গে প্রাচীর তোলার পক্ষে তাঁর যুক্তি, ‘‘কট্টর বামেরা আমাদের সীমান্ত কখনওই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। প্রাচীর কোনও অনৈতিক ব্যাপার নয়। বরং ঠিক উল্টোটা, এবং প্রাচীর অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচাবে।’’ মার্কিন বন্দরগুলিতে ঢোকার মুখে ৮০ কোটি ডলারের ‘জরুরি মানবিক সাহায্য’ এবং মাদক ধরার প্রযুক্তির জন্য আরও ৮০ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার মঞ্জুরের প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্প।

সরকার চালু হলে অভিবাসন প্রক্রিয়ার সংস্কার নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে বৈঠক করতে চান প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা তাঁর কোনও কথাতেই পাত্তা দেননি। সব প্রস্তাবই ফিরিয়ে দিয়েছেন। হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘‘প্রাচীর তোলার জন্য সরকার বন্ধ করে প্রেসিডেন্ট খুবই গর্ববোধ করে ছিলেন। এ বার সরকার চালু করার জন্য সক্রিয় হোন তিনি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘প্রস্তাবগুলোর একটাও হাউসে পাশ হবে না। আর সব ক’টা মিলেও কার্যকর হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ড্রিমারদের জন্য

কোনও চূড়ান্ত সমাধান উনি দিতে পারছেন না, যেটা আমাদের দেশের জন্য খুব দরকার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement