প্রতীকী ছবি।
জো বাইডেন সরকারের নতুন কাবুল নীতি নিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে একদফা কথা হয়েছে, আমেরিকার আফগানিস্তান সংক্রান্ত বিশেষ দূত জালমেই খলিলজাদের। এই মাসের শেষে আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন আসছেন ভারতে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে তাঁর বৈঠকেও উঠবে কাবুল প্রসঙ্গ। আফগানিস্তানের পুর্নগঠন এবং শান্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে নতুন আমেরিকান জমানায় ভারতের ভূমিকা নিয়ে এই আলোচনা মোদী সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। পাশাপাশি, আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিও জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একই রকম গুরুত্বপূর্ণ বলেই জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। এ ক্ষেত্রে আমেরিকা কোন পথে চলে সে দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।
বাইডেন যে কাবুল সমস্যার আশু সমাধান চাইছেন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত ওয়াশিংটনের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে। তাঁর নতুন শান্তি পরিকল্পনার প্রথমেই যেটা রয়েছে তা হল, ট্রাম্প সরকারের ঘোষণা মাফিক ১ মে-র মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সেনা প্রত্যাহার না করে, সেখানে ন্যূনতম আমেরিকান সেনা উপস্থিতি বহাল রাখা। সূত্রের খবর, ভারতের তাতে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তালিবান নেতৃত্বের দেওয়া হিংসা কমানোর প্রতিশ্রুতি যতক্ষণ না বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার না করাই বিবেচকের কাজ হবে বলে মনে করে সাউথ ব্লক। পাশাপাশি, ওয়াশিংটন তালিবান নেতৃত্বের উপর চাপ দিচ্ছে অবিলম্বে ৯০ দিনের শান্তি চুক্তি করতে। তা হলে সুদূর প্রসারী শান্তি উদ্যোগ শুরু করার অবকাশ ও পরিসর পাওয়া যাবে বলে মনে করছে বাইডেন প্রশাসন। ভারত মনে করে, এটা করানো সম্ভব হলে সাময়িক ভাবে হলেও পাকিস্তানের ইন্ধন কমবে।
তবে বাইডেন সরকারের নতুন শান্তি নীতির সবটাই যে ভারতের জন্য স্বস্তিজনক, বিষয়টি এমন নয়। আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় তুরস্ককে সামিল করার কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা যাতে ঘোর আপত্তি রয়েছে ভারতের। তুরস্ক এবং পাকিস্তানের অক্ষ ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মঞ্চগুলিতে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ প্রত্যাহার করার পরে তুরস্ক এবং পাকিস্তান ধারাবাহিক ভাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারত-বিরোধী বক্তৃতা দিয়ে গিয়েছে। ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্তকে পাকিস্তান স্বাগত জানালেও, এই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে নয়াদিল্লির। আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে সরব হবেন রাজনাথ, এমনটাই জানা গিয়েছে।
এটি আমেরিকার নতুন প্রতিরক্ষা সচিবের প্রথম বিদেশ সফর। ১৯ থেকে ২১ মার্চ ভারতে থাকবেন তিনি। রাজনাথ সিংহের সঙ্গে আফগানিস্তান ছাড়া আরও নানা দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে কথা হবে তাঁর। সূত্রের খবর, ভারতে প্রতিরক্ষা শিল্পতালুক গড়ায় সাহায্য করতে চায় পেন্টাগন। সে বিষয়েও কথা হবে দু’জনের।