নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ক্রিস্ট্যালিনা জর্জিয়েভা।—ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণের ছড়িয়ে পড়া রুখতেই শুধুমাত্র দৃঢ় পদক্ষেপ করেনি ভারত, দেশের অর্থনীতির উপর অতিমারির প্রকোপকেও দক্ষ হাতে সামাল দিতে পেরেছে। মন্তব্য আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর প্রধান ক্রিস্ট্যালিনা জর্জিয়েভার। তাঁর মতে, দ্রুত অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চলতি বছরে ভারতকে আরও সক্রিয় হতে হবে।
অতিমারির প্রকোপের মধ্যে কোন দেশের অর্থনীতি কোথায় দাঁড়িয়ে, তা নিয়ে আগামী ২৬ জানুয়ারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে আইএমএফ। তার আগে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জর্জিয়েভা বলেন, ‘‘২৬ জানুয়ারির দিকেই এখন তাকিয়ে সকলে। ভারতও তার মধ্যেই পড়ে। আমাদের রিপোর্টে আপনারা দেখতে পাবেন, ভারতের অবস্থা ততটাও খারাপ নয়। কেন? কারণ অতিমারি এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট সামাল দিতে অত্যন্ত দৃঢ় পদক্ষেপ করতে পেরেছে তারা।’’
১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশে লকডাউনের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন জর্জিয়েভা। তাঁর কথায়, ‘‘এত মানুষ ঘেঁষাঘেঁষি করে বাস করেন সেখানে। তার পরেও কঠোর লকডাউন এবং বিধিনিষেধ জারি করতে সফল হয়েছে ভারত। সরকারি নীতিকে মানুষ সার্বিক ভাবে সমর্থন করেছেন বলেই এই রূপান্তর সম্ভব হয়েছে। ভাল করে দেখলে বোঝা যাবে, কোভিড পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ের মধ্যে ভারতের পরিস্থিতি খুব একটা পাল্টায়নি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অর্থনীতিতে গতি ফিরেছে।’’
আরও পড়ুন: শাওমি-সহ ফের একাধিক চিনা সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা বিদায়ী ট্রাম্প সরকারের
কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক এবং রাজস্ব নীতিরও প্রশংসা করেন জর্জিয়েভা। তিনি জানান, আইএমএফ-এর হিসাবে গড়ে বিভিন্ন দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৬ শতাংশ এসেছে কোভিড কালে উদীয়মান বাজার থেকে। ভারতে এই হার খানিকটা হলেও বেশি। তাই অর্থনীতিকে ছন্দে ফেরানোর অনেক উপায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: কারা টিকা নিতে পারবেন, কারা নয়, নির্দেশিকা জারি করল সরকার
তবে ভারতে লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে দুশ্চিন্তাও প্রকাশ করতে দেখা যায় জর্জিয়েভাকে। তিনি বলেন, ‘‘কোভিড কালে, গত কয়েক মাসে লিঙ্গবৈষম্য যে ভাবে আরও বেশি করে চোখে পড়েছে, তা সত্যিই উদ্বেগের। করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন মহিলারা। কখনও তাঁরা অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত। তা সত্ত্বেও আর্থিক এবং সরকারি সাহায্য থেকে অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত রয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। ছাঁটাই শুরু হলে কারা আগে চাকরি হারান? সবার আগে মহিলাদেরই চাকরি যায়। ভারতে ‘লেবার মার্কেট পার্টিসিপেশন’-এর ক্ষেত্রে মহিলাদের যোগদানও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। আমি জানি, সরকারও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের আরও বেশি করে কাজে লাগাতে হবে।’’