ফাইল চিত্র।
বুধবার যে ভাবে সেনা কপ্টার ভেঙে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত-সহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, নেটিজেনদের একাংশ তার মধ্যে চক্রান্তের আভাস খুঁজে পাচ্ছেন। লাদাখ সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনার পিছনে চিনের ভূমিকা আছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে তাঁরা গত বছরে তাইওয়ানের একটি দুর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
২০২০-র জানুয়ারি মাসে ঠিক একই ভাবে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে-র কাছে পাহাড়ে ভেঙে পড়েছিল তাইওয়ানের সেনা কপ্টার। মারা গিয়েছিলেন তাইওয়ানের চিফ অব জেনারেল স্টাফ, জেনারেল শেন ই-মিং। শেন ছিলেন তাইওয়ান সামরিক বাহিনীর প্রবীণতম আধিকারিক এবং তাইওয়ান বায়ুসেনার অন্যতম প্রধান মুখ। যে কপ্টারে তিনি ছিলেন, সেটি ছিল আমেরিকার তৈরি ইউ-এইচ ৬০এম ব্ল্যাক হক।
যাঁরা এই ঘটনাটির কথা মনে করিয়ে টুইট করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ব্রহ্মা চেলানি। বুধবার সন্ধেয় তিনি লেখেন, ‘‘জেনারেল রাওয়তের মৃত্যুর সঙ্গে ২০২০-র গোড়ায় তাইওয়ানের চিফ অব জেনারেল স্টাফের কপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর অদ্ভুত মিল। জেনারেল শি ই-মিং এবং আরও দু’জন মেজর জেনারেল-সহ মোট ৮ জন মারা যান সে বার। দু’টো ঘটনা চিনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দুই প্রতিরক্ষা কর্তাকে সরিয়ে দিল।’’
তবে চেলানি পাশাপাশি এও বলেছেন, তিনি মনে করেন না এই দুই ঘটনার মধ্যে কোনও নির্দিষ্ট যোগসূত্র আছে। ‘‘এই অদ্ভুত মিল থেকে এ কথা মনে করার কারণ নেই যে, ঘটনাগুলি পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত। অথবা এর পিছনে বাইরের কোনও হাত আছে। বরং দু’টো ঘটনাই ভিতরের গলদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। বিশেষ করে সেনা কপ্টারের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে তো বটেই।’’
লক্ষণীয় হল, চেলানির টুইট নজর এড়ায়নি চিনের। বরং চিনের শাসক দলের অন্যতম মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ চেলানির টুইটের উত্তরে পাল্টা টুইট করেছে। তারা দাবি করেছে, ‘চেলানি যে ভাবে চিনের দিকে আঙুল তুলেছেন, সে ভাবে ভাবলে আমেরিকার দিকেও আঙুল তুলতে হয়। সন্দেহ করতে হয়, ভারত যে ভাবে আমেরিকার আপত্তি অগ্রাহ্য করে রাশিয়ার থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম কিনতে চলেছে, তার জন্য আমেরিকা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’
চুপ করে থাকেননি চেলানিও। তিনি আগেই লিখেছিলেন যে, হিমালয় এলাকার সংঘাতময় পরিস্থিতির কথা মনে রাখলে রাওয়তের মৃত্যুর জন্য এর চেয়ে খারাপ সময় আর হতে পারে না। তার পরে ‘গ্লোবাল টাইমস’ তাঁর টুইট নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে চেলানি দাবি করেছেন, তাঁর টুইটের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং তা চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ‘হীন’ মানসিকতারই প্রতিফলন।