ফের ভয়ঙ্কর রাত নামল আমেরিকায়। আফগান বংশোদ্ভুত বন্দুকবাজের হানায় কেঁপে উঠল ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো শহর। নাইট ক্লাবে হানা দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে অন্তত ৫০টি প্রাণ নিল বন্দুকবাজ। আরও ৫৩ জন জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে মার্কিন প্রশাসন।
অরল্যান্ডোর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে নাইট ক্লাবটি আক্রান্ত হয়েছে, সেই ‘পাল্স’ সমকামীদের নাইট ক্লাব। রোজকার মতো শনিবার সন্ধ্যাতেও পার্টি শুরু হয়েছিল ক্লাবটিতে। উইকএন্ডের ‘পাল্স’ ছিল জমজমাট। রাত ২টো নাগাদ হামলা হয় সেখানে। এক ব্যক্তি দু’হাতে বন্দুক নিয়ে গুলি চালাতে চালাতে নাইট ক্লাবে ঢোকে। ভিতরে যাঁরা তখন পার্টিতে মত্ত, তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বন্দুকবাজের এলোপাথাড়ি গুলিতে লুটিয়ে পড়েন বেশ কয়েক জন। বিপদ বুঝে কেউ কেউ নাইট ক্লাব থেকে বেরিয়ে পড়তে সক্ষম হলেও, অধিকাংশই পালাতে পারেননি। বন্দুকবাজ তাদের পণবন্দি বানায়। নাইট ক্লাব কর্তৃপক্ষ বার বার ফেসবুকে বার্তা পাঠাতে শুরু করে— ‘পালান’, ‘দৌড়তে থাকুন’।
অরল্যান্ডোর পুলিশ অবশ্য দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বিশাল বাহিনী নাইট ক্লাব ঘিরে ফেলে। তার পর বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত ‘সোয়াট’ বাহিনী পণবন্দিদের মুক্ত করতে অভিযান চালায়। বন্দুকবাজের সঙ্গে তাঁদের গুলি বিনিময় শুরু হয়। বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত বাহিনীর সঙ্গে অবশ্য বেশিক্ষণ লড়াই চালাতে পারেনি বন্দুকবাজ। নাইট ক্লাবেই তার মৃত্যু হয়। অন্য দিকে এক ‘সোয়াট’ অফিসার-সহ মোট ৫০ জনের মৃত্যু হয়। প্রথমে এলোপাথাড়ি গুলি এবং পরে দু’পক্ষের গুলি বিনিময়ের জেরে ৫৩ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের আঘাত কতটা গুরুতর, তা পুলিশ জানায়নি। তবে অন্যান্য সূত্রে জানা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজনের জখম গুরুতর। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ওসি গুলিবিদ্ধ, দু’দিনে ধৃত সাড়ে চার হাজার
গণহত্যাকারীর আফগান যোগ! ‘সন্ত্রাসবাদী’ হানা বলছে মার্কিন পুলিশ
অরল্যান্ডো পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে এই ঘটনা ঘরোয়া সন্ত্রাস নাকি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে বন্দুকবাজের নাম ওমর মাতিন এবং সে আফগান বংশোদ্ভুত। একটি অচেনা যন্ত্রও ওই বন্দুকবাজ ব্যবহার করছিল বলে জানা গিয়েছে। আফগান বংশোদ্ভুত ওমর কী উদ্দেশ্যে এমন ভয়ঙ্কর হামলা চালাল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কোনও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন এর পিছনে রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ৯/১১ ঘটনার পর বন্দুকবাজের হামলায় এতগুলি মৃত্যুর ঘটনা এই ঘটল।