Coronavirus

অজ্ঞাত বিপদের মুখে, মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

করোনা-নিয়ন্ত্রণে হোয়াইট হাউসে যে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সীমা বর্মা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ০২:৩৮
Share:

ছবি: রয়টার্স।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে পৃথিবী এখন এক ‘অজ্ঞাত বিপদের মুখে’— আজ এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার প্রধান টেডরস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বলেছেন, এই ভাইরাস চরিত্রে অনেকটা আলাদা ঠিকই, কিন্তু ঠিকমতো পদক্ষেপ করলে একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এই ভাইরাসকে হারাতে পারব।’’ তবে তাঁর মতে, রোগের থেকেও এই ভাইরাস নিয়ে যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, সেটাই বেশি মারাত্মক।

Advertisement

করোনা-নিয়ন্ত্রণে হোয়াইট হাউসে যে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সীমা বর্মা। আমেরিকায় ১৫টি প্রদেশে এখন ১০০ জনেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে।

ডব্লিউএইচও প্রধান মনে করছেন, কোভিড-১৯ ‘ওয়ান-ওয়ে স্ট্রিট’ নয়। যদি বিশ্বের সব দেশ দ্রুততার সঙ্গে কার্যকরী পদক্ষেপ করে, তা হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

Advertisement

প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবেই বিশ্বজুড়ে নিজেদের সংস্থার কর্মীদের গত কাল থেকে বাড়িতে বসে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে টুইটার। সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান জেনিফার ক্রিস্টি বলেছেন, ‘‘যাঁদের পক্ষে সম্ভব, বিশ্ব জুড়ে সেই সব কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। আমরা কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ যতটা পারা যায় নিয়ন্ত্রণ করতে চাই।’’ দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং এবং জাপানে টুইটারের কর্মীদের অবশ্য বাধ্যতামূলক ভাবেই বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে।

বিশ্বে এখন চিনের পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছুঁয়েছে। আজ সেখানে ৪৭৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। মৃতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ২৮। বিশ্ব জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা গত কালই ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে
জি৭-ভুক্ত দেশগুলির সব আর্থিক নীতি নির্ধারক প্রধানেরা আজ এক বৈঠক করেন। করোনা-ত্রাসের ছাপ পড়েছে বিশ্ববাজারেও।

পশ্চিম এশিয়ায় আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ইরানও। বাহরাইন এবং কুয়েত থেকেও নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। তেহরান ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তাদের দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩০০ ছাড়িয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই আজ টিভিতে বলেছেন, ‘‘সংক্রমণ রুখতে প্রশাসনের সব নির্দেশ মেনে চলুন। হাত, মুখ পরিষ্কার রাখুন। নিজের চারপাশও সাফসুতরো রাখুন।’’ সেখানকার উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশে মৃতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ৭৭। চিনের পরে যা সব চেয়ে বেশি।

করোনা যুঝতে নয়া পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিটেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দাবি, আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এখনও পর্যন্ত ৩৯ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। প্রকোপ বাড়লে কর্মক্ষেত্রে হাজিরার ক্ষেত্রে নজর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বরিসের সরকার।

ইটালিতে মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি। সেখানকার প্রশাসন মিলানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। মিলানের মিউজিয়ামগুলিও ফের খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে দর্শকদের বলা হয়েছে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে।

বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, করোনাভাইরাস ক্রমশ এমন একটা সংক্রমণ তৈরি করবে, যা কখনওই নির্মূল হবে না। বিশেষ বিশেষ সময়ে এর প্রকোপ বাড়বে। সাধারণ ফ্লু, ঠান্ডা লাগা বা বুকে সংক্রমণের মতোই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement