হু প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। —ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে সব তথ্য দিচ্ছে না চিন। ফলে তদন্তের গভীরে যেতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলল আমেরিকা-সহ ১৪টি দেশ। করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে তদন্ত করতে গত জানুয়ারিতে চিনের উহানে যায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-(হু)র একটি বিশেষ দল। মঙ্গলবার তারা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, কোনও গবেষণাগার থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়নি। পাশাপাশি, এই অভিযোগ উঠেছে যে, তদন্তের গভীরে যেতে যা যা তথ্য এবং সহযোগিতা দরকার চিনের তরফে তেমনটা করা হয়নি। আর তা নিয়েই একটা টানাপড়েনের আবহ তৈরি হয়েছে।
চিনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। তদন্তে ঠিক মতো সহযোগিতা না করার জন্য চিনকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর হু প্রধান বলেন, “উহানের যে সব গবেষণাগারে যে তদন্ত করা হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। নতুন করে তদন্ত শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “এ বিষয়ে একটা সমাধানে পৌঁছনোর জন্য আরও তথ্য এবং গবেষণার জরুরি।” যদিও চিনে পাঠানো বিশেষজ্ঞ দলটি গবেষণাগার থেকে ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি একেবারে উ়ড়িয়ে দিতেও পারেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে সুনিশ্চিত হতে আরও যে তদন্তের প্রয়োজন এবং আরও বিশেষজ্ঞের এ ক্ষেত্রে নিযুক্ত হওয়া প্রয়োজন সে কথাও জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন হু প্রধান। এবং তার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে পাল্টা সরব হয়েছে চিনও। সে দেশের বিদেশমন্ত্রক থেকে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা চলছে। এমনটা যদি করা হয়, তা হলে এই ভাইরাসের উৎস নিয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাধাপ্রাপ্ত হবে। এমনকি, করোনার বিরুদ্ধে যে লড়াই চালানো হচ্ছে বিশ্ব জুড়ে তা সঙ্কটে পড়বে। আর তার ফলে কোভিডে প্রাণহানির ঘটনাও বাড়বে বিশ্ব জুড়ে’।
করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে তথ্য লুকোচ্ছে চিন— প্রথম থেকেই এই অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা। শুধু তাই নয়, উহানের গবেষণাগার থেকেই এই ভাইরাসের সংমক্রণ ঘটেছে বলে দাবি করেছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তত্ত্ব নিয়ে যখন আন্তর্জাতিক মহলে ক্রমাগত চাপ বাড়তে শুরু করেছে, হু একটি তদন্তকারী দল পাঠায় চিনে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে উহানে মানবদেহে প্রথম করোনাভাইরাস মেলে। তার পর ধীরে ধীরে তা চিনের গণ্ডি পেরিয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২ কোটি ৮১ লক্ষ ৫২ হাজার ৪১৬। মৃত্যু হয়েছে ২৮ লক্ষেরও বেশি।