করোনা আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: এএফপি।
শুরু থেকেই বিশেষ পাত্তা দিতে চাননি তিনি। করোনা-আতঙ্কে বিশ্বের সিংহভাগ দেশে লকডাউন চললেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফলাও করে জানিয়েছেন, ইস্টারের মধ্যে অর্থাৎ আর দিন পনেরো পর থেকেই কাজে ফিরে যেতে পারবে আমেরিকাবাসী। অথচ আজই করোনাভাইরাস সংক্রমণের নিরিখে চিন-সহ বিশ্বের সব দেশকে ছাপিয়ে গেল আমেরিকা। চিন (৮১ হাজার ৩৪০) ও ইটালিকে (৮০ হাজার ৫৮৯) পিছনে ফেলে মার্কিনমুলুকে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯২ হাজার ২০৬।
তবে এর পিছনেও অন্য ব্যাখ্যা রয়েছে ট্রাম্পের। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ‘‘আমরা প্রচুর পরীক্ষা করছি, তাই এত আক্রান্ত ধরা পড়ছে।’’ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জানিয়েছেন, আমেরিকার ৫০টি প্রদেশে এখন করোনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে। দেশ জুড়ে ইতিমধ্যে সাড়ে পাঁচ লক্ষের বেশি মানুষ পরীক্ষা করেছেন। তবে চিনকে ছাপিয়ে যাওয়ার তথ্য বিশেষ আমল দিতে চাননি প্রেসিডেন্ট। বরং অবিশ্বাসই করেছেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি সরাসরি বলেছেন, ‘‘আপনারা কি জানেন চিনে আক্রান্তের সংখ্যা আসলে কত? চিন যা বলছে তাই আপনারা বিশ্বাস করছেন।’’ এর ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই আবার চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে তাঁর ‘বিস্তারিত আলোচনা’ হয়েছে বলে টুইট করেন ট্রাম্প। কী আলোচনা? ট্রাম্পের কথায়, ‘‘করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে চিনের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। আমরা মিলিত ভাবে কাজ করছি।’’ এ দিনই দু’লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছে মার্কিন কংগ্রেস।
আমেরিকায় করোনা-আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০৪। ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৩৪৫ জন। সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার। এর মধ্যেই কাল ট্রাম্প বলে ফেলেছেন, ‘‘আমেরিকাবাসীকে আবার কাজে ফিরে যেতে হবে। এবং আমার মনে হয় সেটা খুব দ্রুত হবে। দেশের একটা বড় অংশ, যেটা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নয়, হয়তো আমরা তাদের আবার কাজে ফেরাব।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘যখন কাজে ফেরার কথা বলছি, তখন অনেকেই এর ভুল ব্যাখ্যা করবেন। কিন্তু যাঁরা কাজে ফিরবেন তাঁরা প্রত্যেকেই নির্দেশিকা মেনে দূরত্ব বজায় রাখবেন, হাত ধোবেন, হাত মেলাবেন না।’’ বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফল হতে পারে মারাত্মক। কালই এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, যাবতীয় নিয়ম মেনে চললেও আগামী ৪ মাসে আমেরিকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ৮০ হাজার ছুঁতে পারে। এর মধ্যেই ফক্স নিউজের সঞ্চালিকা এইন্সলে ইয়ারহার্ডন্ট পড়েছেন সমালোচনার মুখে। ঘরবন্দি মহিলারা চুল ও নখের যত্ন কী ভাবে নেবেন, শোয়ে সে কথা বলতেই ক্ষুব্ধ দর্শকেরা টুইট করতে শুরু করেন। অনেকে বলেন, ‘‘এখন কি এই সবের সময়?’’