থ্যাঙ্কসগিভিং উপলক্ষে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে ব্যস্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়টার্স।
সামনের সপ্তাহ, না হলে তার পরের সপ্তাহ থেকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়ে যাবে বলে জানালেন আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার বিদেশের মাটিতে কর্মরত সেনাবাহিনীর সদস্যদের ভিডিয়ো-বার্তায় থ্যাঙ্কসগিভিং ডে-র শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এ কথা বলেন ট্রাম্প।
অতীতে অবশ্য করোনা সংক্রমণ নিয়ে এত রকম বিতর্ক সৃষ্টিকারী কথা বলেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট, তাঁর কথায় ভরসা করতে অনিচ্ছুক অনেকে। তবে করোনার সম্ভাব্য টিকা-প্রস্তুতকারী আমেরিকার দুই সংস্থা ফাইজ়ার ও মডার্না আগেই জানিয়েছিল, সরকার জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দিলে ডিসেম্বরে টিকা দেওয়া শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু ট্রাম্পের বার্তা প্রকাশ্যে আসার পরে তারা এই বিষয়ে আর নতুন কিছু জানায়নি।
এরই মধ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ফাইজ়ারের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী মাইকেল ইয়েডন।
একটি পত্রিকার রিপোর্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘ভ্যাকসিনের কোনও প্রয়োজন নেই। শারীরিক ভাবে সুস্থ, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, এমন লক্ষ লক্ষ লোককে, ভাল করে পরীক্ষা হয়নি এমন ভ্যাকসিন দেওয়ার কোনও অর্থ নেই।’’
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি প্রতিষেধক নিয়ে প্রশ্ন ওঠায়, তারা আবার নতুন করে বিশ্বব্যাপী ট্রায়াল করবে বলে শোনা যাচ্ছে। গত সোমবার ট্রায়ালের প্রাথমিক রিপোর্টে তারা জানায়, দু’রকম পদ্ধতিতে ট্রায়াল হয়েছিল। একটিতে দেড় ডোজ় ও অন্যটিতে দু’ডোজ় টিকা দেওয়া হয়। প্রথমটি ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণ করলেও দ্বিতীয় পদ্ধতিতে ৬২ শতাংশ সাফল্য মিলেছে। এই দু’রকম ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ-ও অভিযোগ উঠছে, প্রথম পদ্ধতিটিতে শুধুমাত্র অল্পবয়সিদের উপরে পরীক্ষা করা হয়েছিল। দেড় ডোজ়ের পরিমাণ নিয়েও আমেরিকার টিকাবণ্টন বিভাগের প্রধান অভিযোগ তুলেছেন, দুর্ঘটনাবশত ভায়ালে কম ওষুধ ছিল। সেটাই এখন অক্সফোর্ড ‘দেড় ডোজ়’ বলে চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: অ্যামাজনের আইন ভাঙার জরিমানা মাত্র ২৫ হাজার, ক্ষুব্ধ বণিক সংগঠন
অক্সফোর্ডের মেডিসিনের অধ্যাপক তথা ব্রিটেনের সরকারি জীবনবিজ্ঞান উপদেষ্টা স্যার জন বেল অবশ্য বৃহস্পতিবার এই সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবটা জানাচ্ছি মানে এই নয়, আমরা কোনও গল্প দিচ্ছি।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, সমস্ত তথ্য দিয়ে এই সপ্তাহের শেষে মেডিক্যাল জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত হতে পারে অক্সফোর্ডের গবেষণাপত্র।
ব্রিটেন সরকার যদিও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা জুটির তৈরি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে খতিয়ে দেখতে একটি স্বাধীন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, ‘‘আমরা ওই সংস্থাকে সরকারি ভাবে দায়িত্ব দিয়েছি, অক্সফোর্ডের গবেষণার তথ্য খতিয়ে দেখতে। সেই সঙ্গে প্রতিষেধকটি কতটা নিরাপদ, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি।’’ ও দিকে, অক্সফোর্ড নতুন করে ট্রায়াল করতে পারে বলে শোনা যেতেই, রুশ ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’ প্রস্তুতকারী সংস্থা গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউট তাদের পরামর্শ দিয়েছে, অক্সফোর্ডের চ্যাডক্স১-এর সঙ্গে ‘স্পুটনিক ভি’ কম্বাইন করে প্রয়োগ করে দেখতে। গত কাল টুইট করে তারা জানিয়েছে, নতুন করে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করলে অক্সফোর্ড যেন অবশ্যই এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করে।
আরও পড়ুন: নজরে চিন, সক্রিয় শ্রিংলা ও ডোভাল