প্রতীকী ছবি।
দিনরাত এক করে গবেষণা চলছে। চাই একটা প্রতিষেধক। ‘‘তার আগে পর্যন্ত বিশ্রাম নেই,’’ বলছেন বিজ্ঞানীরাই। করোনাভাইরাসে বিশ্বে সংক্রমিত ১৫ লাখেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা ৮৯ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে প্রকৃতিবিদদের আশঙ্কা— ‘‘এ তো সবে শুরু!’’
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এনরিক সালা-র কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে এমন আরও অনেক সংক্রমণের শিকার হতে হবে আমাদের, যদি আমরা এ ভাবেই প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে থাকি। বন্যপ্রাণী মেরে খাই বা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করি।’’
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, চিনের উহানে মাংসের বাজার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার’-এর একটি রিপোর্ট বলা হয়েছিল, প্যাঙ্গোলিন বা পিপীলিকাভূকদের মাংস থেকে মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু তেমন জোরদার প্রমাণ মেলেনি। বিশেষজ্ঞদের কথায়, ‘‘প্রকৃতির প্রতিটি কোণায় এমন বহু অজানা ভাইরাস লুকিয়ে রয়েছে। যে মুহূর্তে আমরা কোনও কিছুকে ধ্বংস করছি, তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা মারণ ভাইরাসের সামনে আমরা নিজেরাই ধরা দিচ্ছি। ডেকে আনছি অজানা অসুখ।’’
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক স্যামুয়েল মায়ের্স বলেন, ‘‘প্রতিটি প্রাণীর দেহ অসংখ্য জীবাণুর আধার। তার অধিকাংশের কথাই আমরা জানি না।’’ প্রকৃতির সঙ্গে খেলা এ ভাবে চললে, তার দাম যে দিতে হবে, সে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। নেচার-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, ১৯৫০-এর দশকে অন্তত ৩০টি নতুন সংক্রামক ব্যাধি জন্ম নিয়েছিল। ১৯৮০-তে এসে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়। এ ভাবেই একে একে এসেছে এইচআইভি, ইবোলা, সার্স, মার্স, জ়িকা-র মতো মারণ রোগ।
কোভিড-১৯ রুখতে এই মুহূর্তে ১৪০টিরও বেশি ওষুধের পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে ১১টির ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ভাইরাস বনাম মানুষের এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান গবেষণা দফতর, বেসরকারি ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা। বেশির ভাগ গবেষণা এখনও মাঝপথে। ওষুধ মিললেও তা মানুষের দেহে প্রয়োগ না করলে বোঝা মুশকিল, আদৌ কাজ করবে কি না। একটি নামজাদা ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থার কর্তা পল স্টোফেলস জানান, এই সব ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হতেও পাঁচ-ছ’মাস দেরি। তত দিনে সংক্রমণ কোথায় পৌঁছবে, জানা নেই।