ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।—ছবি এএফপি।
করোনা সংক্রান্ত পাঁচ-পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কোবরা বৈঠকে যোগ দেননি। উল্টে সেই সময়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অন্তঃসত্ত্বা সঙ্গিনী ক্যারি সাইমন্ডসের সঙ্গে ১২ দিনের জন্য ছুটি কাটাতে চলে গিয়েছিলেন— দেশ জুড়ে করোনা-সঙ্কটের মধ্যে এমন চাঞ্চল্যকর দাবিই প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের একটি দৈনিক। সমালোচনার মুখে ক্যাবিনেট অফিসের মন্ত্রী মাইকেল গোভ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ না দেওয়ার দাবি একেবারেই ভিত্তিহীন। ব্রিটেনে মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ২০ হাজারের উপরে। দৈনিকটির অভিযোগ, বরিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি সপ্তাহ হেলায় নষ্ট করেছেন।
ওই রিপোর্টে দাবি, ২৪ জানুয়ারি চিন থেকে অন্তত ছ’টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাস। সে সময়ে ব্রিটিশ সরকার প্রথম বৈঠক ডাকে। তাতে না গিয়ে ১০, ডাউনিং স্ট্রিটে চিনা দূতের সঙ্গে চিনা নববর্ষ উদ্যাপনে ব্যস্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অনেক বেশি চিন্তা তখন চুক্তিহীন ব্রেক্সিট উতরে যাওয়া নিয়ে।
জানুয়ারির গোড়াতেই এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব জনস্বাস্থ্য বিষয়ের ভারতীয় বংশোদ্ভূত অধ্যাপক দেবী শ্রীধর টুইটারে জানান, চিনের ওই ‘অস্বাভাবিক নিউমোনিয়া’ ছোঁয়াচে হতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘ইচ্ছাকৃত হলে ফল ভুগতে হবে’, চিনকে হুমকি আমেরিকার
জানুয়ারির গোড়ায় লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিল ফার্গুসন জানিয়েছিলেন, এই ভাইরাস এক জনের শরীর থেকে ছড়াতে পারে অন্তত তিন জনের শরীরে। জানুয়ারি থেকে মার্চ, অন্তত ১ লক্ষ ৯০ হাজার মানুষ উহান থেকে ব্রিটেনে এসেছেন বলে দাবি। মনে করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ১৯০০ জন সে সময় সংক্রমিত হন।
২৯ জানুয়ারি ব্রিটেনে প্রথম দু’টি সংক্রমণের খবর মেলে। ইয়র্কশায়ারেরর একটি হোটেলে অসুস্থ হন দুই চিনা নাগরিক।
আরও পড়ুন: এবার চিকিৎসকরা সম্মান জানালেন এক ‘সাধারণ’ ট্যাক্সি ড্রাইভারের জন্য
ফ্রেব্রুয়ারিতে প্রেমিকার সঙ্গে কেন্টে ১২ দিনের ছুটি কাটাতে চলে যান বরিস। সে সময়ে পরপর কোবরা বৈঠক হয়ে যায় তাঁকে ছাড়াই। ফলে অনেক সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যায়নি। অভিযোগ, করোনাকে সাধারণ ফ্লু বলে মনে করা হয়েছিল। মার্চের মধ্যে গোটা লন্ডনে ছড়িয়ে যায় ভাইরাস। তখনও অন্তত ৩০ লক্ষ মানুষ রোজ বাইরে বেরিয়েছেন। মার্চের গোড়ায় বরিস জানিয়েছেন, তিনি হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের সঙ্গেও করমর্দন করেছেন! অবশেষে ২৩ মার্চ লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়েছেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)