ছবি: এএফপি।
সে জেমস বন্ড যতই বলুন না কেন, ‘নো টাইম টু ডাই’, অবস্থা সঙ্গিন। করোনায় মৃত্যুমিছিল নতুন করে বাড়ছে। আপাতত সিনেমা হলে ফিল্ম দেখতে যাওয়া মানে, সাক্ষাৎ মৃত্যুকে ডেকে আনা! বিশেষজ্ঞরা এই ফরমান দিতেই মাল্টিপ্লেক্স সংস্থা ‘সিনেওয়ার্ল্ড’ আমেরিকায় তাদের ৫৪৩টি থিয়েটার ও ব্রিটেনের ১২৮টি সিনেমা হল অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিল।
এ বছর এপ্রিলে রিলিজ় করার কথা ছিল ২৫তম বন্ড-ফিল্ম ‘নো টাইম টু ডাই’। কিন্তু সেই সময়েই বিশ্বে জাঁকিয়ে বসে করোনাভাইরাস। ছবি আর মুক্তি পায়নি। সম্প্রতি সিনেমা হল খোলায় ছবি-মুক্তি নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছিল। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকায় দ্বিতীয় সংক্রমণ ঢেউয়ের আশঙ্কায় ফের মাল্টিপ্লেক্স বন্ধ হতেই প্রযোজক সংস্থা জানিয়ে দিল, এ বছর আর মুক্তি পাবে না বন্ড। তার দেখা মিলবে হয়তো ২০২১-এর এপ্রিলে।
শুধু বন্ড-ই নয়, করোনার ধাক্কায় আটকে রয়েছে ‘ব্ল্যাক উইডো’, ‘দ্য ফ্যালকন অ্যান্ড দ্য উইন্টার সোলজার’। ‘দ্য ব্যাটম্যান’-এর মতো ফিল্ম ২০২১-এ মুক্তি পাবে বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছবির নায়ক রবার্ট প্যাটিনসন খোদ করোনায় আক্রান্ত। নিউ ইয়র্কের ন’টি এলাকার ভয়াবহ অবস্থা। ফের লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে। দেশের ন’টি প্রদেশে রেকর্ড গতিতে বেড়েছে সংক্রমণ। পশ্চিম ও মধ্য-পশ্চিমে সব চেয়ে বেশি। ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে এ সব জায়গায়। কেন্টাকি, মিনেসোটা, মন্টানা এবং উইসকনসিনের অবস্থা বেশ খারাপ। ক্যানসাস, নেব্রাস্কা, নিউ হ্যাম্পশায়ারের অবস্থাও খারাপ। দৈনিক সংক্রমণ ফের ৫০ হাজার ছুঁয়ে ফেলছে আমেরিকায়। বিশ্বে সংক্রমিতের সংখ্যা সাড়ে ৩ কোটি ছাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) আজ জানিয়েছে, পরিসংখ্যান যা বলছে, তাতে ১০ জনের ১ জনই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্বে করোনা
মৃত - ১০,৪৪,৫১৬
আক্রান্ত - ৩,৫৬,২৭,০৩৭
সুস্থ - ২,৬৭,৭৪,৪৯৯
করোনা রুখতে এমনিতেই একগুচ্ছ নিয়ম জারি করেছে ব্রিটিশ প্রশাসন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, এক জায়গায় ছ’জনের বেশি জড়ো হওয়া যাবে না। এই কড়াকড়ি নিয়ে ক্ষুব্ধ দেশবাসীর একাংশ। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজে কাল বলেন, ‘‘বোঝার চেষ্টা করুন, যত দিন না ভ্যাকসিন আসছে, এ সবের প্রয়োজন আছে।’’ এর মধ্যেই আজ
একটি ব্রিটিশ দৈনিক দাবি করল, ফের তিন দফা লকডাউন জারি করতে চলেছে সরকার। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারলে, সার্বিক ভাবে হোক কিংবা স্থানীয়, ফের লকডাউন করা হবে। সে ক্ষেত্রে আগের বারের থেকেও কড়া নিয়ম জারি হবে।
আরও পড়ুন: গুরুত্ব না দেওয়ার ফল, ট্রাম্পের করোনা সংক্রমণ নিয়ে খোঁচা বেজিংয়ের
স্পেনে আগেই লকডাউন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, মাদ্রিদ নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। প্যারিসও রবিবার ‘বিপদসঙ্কেত’ দিয়ে দিল। ফ্রান্সের রাজধানী ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে কড়াকড়ি শুরু হবে ফের। প্যারিসের বিখ্যাত বার, কাফেগুলি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ে ভেরাঁ আজ জানান, পরিস্থিতি না শুধরোলে কিছু করার নেই।
আরও পড়ুন: ভোটের টানেই হাসপাতাল-ছুট!
এর মধ্যেই আজ নিউজ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন জানান, ‘দ্বিতীয় বারের জন্য করোনাকে হারালো’ দেশ। কড়া লকডাউন এবং সীমান্ত সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ায় মে মাসের মধ্যেই করোনা-মুক্ত হয়ে যায় নিউজ়িল্যান্ড। ১০২ দিন কোনও নতুন সংক্রমণের খবর ছিল না। কিন্তু অগস্টে ফের অকল্যান্ডে করোনা-আক্রান্ত ধরা পড়ে। এর পরে আবার তিন সপ্তাহের জন্য শহরবাসীদের ‘বন্দি’ রাখা হয়েছিল। জেসিন্ডা আজ বলেন, ‘‘আমরা ফের হারিয়ে দিয়েছি ভাইরাসকে।’’