এঁদের সংখ্যা বাড়বে উদ্বেগজনক ভাবে। -ফাইল ছবি।
এই অতিমারির দরুন আর ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যের শিকার হবেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক সাম্প্রতিক গবেষণা এই উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছে।
গবেষণা জানিয়েছে, এই অতিমারির যে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়েছে ও পড়তে চলেছে আগামী দিনে, শুধু তার ফলেই বিশ্বে আরও ২০ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষকে চরম দারিদ্র্যের যন্ত্রণায় ভুগতে হবে। যার অর্ধেকেরও বেশি মহিলা। ২০৩০ সালের মধ্যে। এই সংখ্যাটাকে হিসাবের মধ্যে রাখলে আর ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বে চরম দারিদ্র্যের শিকার হবেন মোট ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮ ভাগের এক ভাগ (সেন্সাস ব্যুরোর ইন্টারন্যাশনাল ডেটা বেস জানাচ্ছে, ২০১৮-র ১৩ জুন পর্যন্ত বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাতশো কোটি)। গবেষণাটি চালিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে থাকা ‘ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি)’।
কোনও দেশে সংক্রমণ রোখার বিভিন্ন পর্যায়ে লকডাউন বা অন্যান্য কারণে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, আগামী ১০ বছরে তার কী কী প্রভাব পড়তে পারে সেই সব দেশ-সহ বিশ্বের অর্থনীতিতে তা সবিস্তারে খতিয়ে দেখা হয়েছে এই গবেষণায়। অতিমারির কত রকম প্রভাব আগামী এক দশকে বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়তে পারে, খতিয়ে দেখা হয়েছে সেই দিকগুলিও।
তবে গবেষণার এই তথ্যাদির সঙ্গে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষার ফলাফলের বেশ কিছুটা ফারাক রয়েছে। অতিমারির আগেকার বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে তুলনা করে আইএমএফ-এর সমীক্ষা জানিয়েছিল, এই অতিমারির দরুন ২০৩০ সালের মধ্যে আরও ৪ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ গোটা বিশ্বে চরম দারিদ্র্যের শিকার হবেন।
আরও পড়ুন: মাস্ক ব্যবহার করুন সবাই, আর্জি ভাবী প্রেসিডেন্টের
আরও পড়ুন: নতুন ভিসা বিলে সুখবর আমেরিকায় কর্মরতদের জন্য
রাষ্ট্রপুঞ্জের গবেষণা এও জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের ধাক্কা কম-বেশি যে দেশগুলিকে সামলাতে হচ্ছে, তাদের ৮০ শতাংশেরই অর্থনীতি আগামী ১০ বছরে এমন বেহাল অবস্থায় থাকবে যেখান থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে না। কারণ, অতিমারির দরুন সব রকমের উৎপাদন মার খেয়েছে। যা তাদের অতিমারির আগেকার অর্থননৈতিক স্থিতাবস্থায় ফেরার পথে প্রতিবন্ধক হয়ে উঠছে। এই সমস্যা আগামী ১০ বছর থাকবে।
তবে কিছু আশার কথাও শুনিয়েছে ইউএনডিপি-র গবেষণার ফলাফল। জানিয়েছে, আগামী এক দশকে প্রচুর বিনিয়োগ আসবে সামাজিক সুরক্ষা, কল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলিতে। বিনিয়োগ হবে প্রশাসন, পরিচালন ব্যবস্থায়, ডিজিটালাইজেশন ও অর্থনীতিকে সবুজ (‘গ্রিন ইকোনমি’) করে তোলার লক্ষ্যে। যা ভবিষ্যতে অর্থনীতিতে করোনা আক্রান্ত দেশগুলির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য শক্তি জোগাবে।