Coronavirus

আবার স্থানীয় সংক্রমণ চিনে, ভয় স্পেনেও

ইউরোপে ইটালির পরে সবে চেয়ে ভয়াবহ দশা স্পেনেই। গোটা ইউরোপে আক্রান্তের সংখ্যা এখন অন্তত দেড় লক্ষে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৪:৩৭
Share:

করোনার সঙ্গে লড়তে স্পেনের মাদ্রিদে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী হাসপাতাল। এএফপি

তাঁর চিকিৎসক ‘করোনা-পজ়িটিভ’ ধরা পড়ার পরে স্বেচ্ছা গৃহবন্দি হয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। শুক্রবার ৬৫ বছর বয়সি ম্যার্কেলকে নিউমোনিয়ার প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসক। আজ জানা যায়, চিকিৎসক ‘করোনা পজ়িটিভ’। তার পরেই স্বেচ্ছা গৃহবন্দিদশায় চলে যান ম্যার্কেল। রবিবার তাঁর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক দিন বাড়িতে থেকেই কাজকর্ম করবেন চ্যান্সেলর।

Advertisement

৮৫ কোটির শহর নিউ ইয়র্কে গত তিন ধরে কার্যত লকডাউন চলছে। আজ শহরের মেয়র বিল দ্য ব্লাসিয়ো জানান, মাস্ক ও চিকিৎসার অন্যান্য সরঞ্জাম বিলির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছেন তিনি। আমেরিকাতে মৃত বেড়ে ৩৭১। নিউ ইয়র্ক ছাড়া শিকাগো ও লস অ্যাঞ্জেলেসেও লকডাউন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘বাড়িতেই থাকুন। জীবন বাঁচান। জাতীয় ত্যাগ স্বীকারের আদর্শ সময়। ভালবাসার লোকজনকে যত্নে রাখারও সময়। আমরা জয় করবই।’’

এত দিন কিছুটা স্বস্তি থাকলেও উদ্বেগ ফিরে এসেছে চিনে। সোমবার বেজিং থেকে ১২টি শহরে আন্তর্জাতিক উড়ান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করছে প্রশাসন। বাইরে থেকে আসা মানুষের মাধ্যমে করোনার প্রকোপ ঠেকানোর চেষ্টা করছে তারা। কালই বেজিংয়ে ৪৬ জন নতুন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, যাঁরা ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন। তিন দিন পরে ফের স্থানীয় ভাবে সংক্রমণের খবরও মিলেছে চিনের গুয়াংঝৌয়ে।

Advertisement

চাপ বাড়ছে স্পেনেও। আজ সকাল থেকে স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে বসেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেজ়। করোনা-সঙ্কটের জেরে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও বাড়ানোর কথা ভাবছেন তাঁরা। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে মৃত্যুর হার বেড়েছে ৩০ শতাংশ। শুধু আজ মৃতের সংখ্যা ৩৯৪। মোট সংখ্যা ১৭২০। ইউরোপে ইটালির পরে সবে চেয়ে ভয়াবহ দশা স্পেনেই। গোটা ইউরোপে আক্রান্তের সংখ্যা এখন অন্তত দেড় লক্ষে।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘সামনে আরও কঠিন দিন আসছে। শেষ বেলায় কঠিন হতে হবে। ঝুঁকি সর্বত্র।’’ গত ১৩ মার্চ থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এ দেশে। ভাবা হয়েছিল, ১৫ দিন চলবে। কিন্তু এখন যে ভাবে মৃত্যু বাড়ছে, লকডাউনও বাড়ানোর কথা ভাবতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ হাসপাতাল। ২৫ হাজার ছুঁয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবারই এক ধাক্কায় ৫ হাজার নতুন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

বিশ্বে এখন ৩৫টি দেশ তালাবন্দি। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরির অবস্থার বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান বলেছেন, কেবল লকডাউন করে করোনাভাইরাসকে কাবু করা সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, ‘‘কারা অসুস্থ, তাঁদের খুঁজে বার করে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তাঁরা যাঁদের কাছাকাছি গিয়েছেন, সংশ্লিষ্টদেরও আলাদা করে রাখতে হবে। লকডাউন করা সত্ত্বেও একটা বিপদ হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কড়া পদক্ষেপ না করা হলে, গতিবিধিতে নিষেধ উঠে গেলে এবং লকডাউন তোলা হলে ফের ঝাঁপাবে করোনা।’’

ব্রিটেনে এখনও পর্যন্ত মৃত ২৪০ জন। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কথায়, ‘‘সংখ্যাগুলো ভয় জাগাচ্ছে। ইটালির থেকে দু’তিন সপ্তাহ মাত্র পিছিয়ে আমরা।’’ গত কালই ফের নয়া রেকর্ড গড়েছে ইটালি— কোভিড-১৯-এ ৭৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে, আক্রান্তদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে এক জন হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement