ছবি: রয়টার্স।
আমেরিকায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে হু হু করে বাড়ছে ভেন্টিলেটরের চাহিদা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠে নামলেন খোদ প্রেসিডেন্ট। নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা যাতে দ্রুত ভেন্টিলেশন পরিষেবা পান, সে জন্য কোরীয় যুদ্ধের আমলের বিশেষ আইন প্রয়োগ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘ডিফেন্স প্রোডাকশান অ্যাক্ট’ নামে ওই আইন প্রয়োগ করে গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা জেনারেল মোটরসকে যত দ্রুত সম্ভব বেশি সংখ্যায় ভেন্টিলেটর তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ওই আইন অনুযায়ী, দেশের বিপর্যয় সামলাতে প্রেসিডেন্ট তাঁর বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে কোনও সংস্থাকে সব কিছু ফেলে শুধুমাত্র যুদ্ধের সরঞ্জাম বানাতে বলতে পারেন। গত কাল হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, এখন প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণ ভেন্টিলেটর। সে জন্যই জেনারেল মোটরসকে সব কাজ ছেড়ে এখন এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
দিন কয়েক আগেই ওই গাড়ি সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। টুইটারে অভিযোগ করেন, ৪০ হাজারের বদলে মাত্র ৬ হাজার ভেন্টিলেটর বানাবে বলে জানিয়েছে ওই সংস্থা। কিন্তু দেশ জুড়ে প্রতি দিন চাহিদা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে মাত্র ৬ হাজার ভেন্টিলেটরে কিছু হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে শুধু নিউ ইয়র্কেই প্রয়োজন ৪০ হাজার ভেন্টিলেটর। এখনই সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘ওরা (জেনারেল মোটরস) আর্থিক লেনদনের বিষয় নিয়ে সময় নষ্ট করছিল। আপাতত ওদের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা সদর্থক হয়েছে। তবে আমাদের প্রয়োজনটা এখন এতটাই বেশি যে চুক্তির বাইরে গিয়েও কাজ করতে হতে পারে ওই সংস্থাকে।’’
গত বৃহস্পতিবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ‘ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’ বিভিন্ন প্রদেশের হাসপাতালে ছ’হাজার ভেন্টিলেটর দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ সামলানোর মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে। তিনি জানিয়েছেন, কোন হাসপাতালে কত ভেন্টিলেটর রয়েছে, বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নরেরা আপাতত তার খতিয়ান দেখছেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, দ্রুত উৎপাদন বাড়িয়ে আগামী ১০০ দিনের মধ্যে আমেরিকার বন্ধু দেশগুলিকে মোট ১ লক্ষ ভেন্টিলেটর সরবরাহ করতে সক্ষম হবেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ভেন্টিলেটর চাইছিলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত। আশা করি, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। ইটালি, স্পেন, জার্মানিরও প্রচুর ভেন্টিলেটর প্রয়োজন। আমরা প্রচুর যন্ত্র বানাচ্ছি। যাতে দেশের মানুষদের সুস্থ করে তোলার পাশাপাশি বিশ্বের অন্য দেশের আক্রান্তদেরও পরিষেবা দিতে পারি।’’