কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। -ফাইল ছবি।
আর পার্লামেন্টে যাচ্ছেন না কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। যাচ্ছেন না কোনও সরকারি অনুষ্ঠানেও।
স্ত্রী, তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁর সরকারি বাসভবনে নিজেকে কার্যত বন্দি করে রেখেছেন ট্রুডো, পার্লামেন্ট থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে। ১৪ দিনের জন্য। এটাই ট্রুডোর ‘সেল্ফ-আইসোলেশন’। স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ের-ট্রুডোর রক্তপরীক্ষায় যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। তবে ট্রুডো নিজেই জানিয়েছেন, সেখানে দিব্য রয়েছেন স্ত্রী আর তিন ছেলেমেয়ে। স্ত্রী সারাটা দিন টেলিফোনে গল্প করে চলেছেন বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে। আর ছেলেমেয়েরা মেতে রয়েছেন ‘লেগো’ খেলায়।
স্ত্রীর থেকে তিনিও সংক্রামিত হতে পারেন আর তাঁর থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে পার্লামেন্টের এমপি ও ট্রুডোর মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে এই আশঙ্কায় নিজেকে তাঁর বাড়িতেই বন্দি করে ফেলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। নিজেরই সিদ্ধান্ত।
সেই ‘সেল্ফ-আইসোলেশন’ থেকেই টেলিফোনে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য আর তাঁর সরকারি কার্যালয়ের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন ট্রুডো। বিভিন্ন সরকারি কাজের নির্দেশ দিচ্ছেন। এমনকি, নিয়মিত টেলিফোনে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গেও। কথা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাঁকরের সঙ্গে।
আরও পড়ুন- করোনা: মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সে রাজি পাকিস্তান
আরও পড়ুন- করোনায় মৃত বৃদ্ধার শবদাহে আপত্তি, দিল্লির নিগমবোধ ঘাট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের
বাড়ির লনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রুডো বলেছেন, ‘‘আমি এটা জানিয়ে দিতে চাই, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই আমার শরীরে। আমি দিব্য আছি। প্রযুক্তির দৌলতে বাড়ি থেকেই সব সরকারি কাজকর্ম চালাচ্ছি। ১৪ দিন এটা করতে হবে। এর কিছু অসুবিধাও আছে। তাই কিছুটা যে অস্বস্তিতে নেই, সেটাও বলতে পারছি না।’’
তবে সোফিয়ার রক্তপরীক্ষায় করোনার সংক্রমণের প্রমাণ মেলার পর স্ত্রী, তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে নিজেকে ‘গৃহবন্দি’ করার সিদ্ধান্ত নিজেই নিয়েছেন ট্রুডো। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা তো সামাজিক জীব। তাই এই ভাবে সকলের আড়ালে সরে থাকতে ভালও লাগছে না। কিন্তু এটা তো করতে হবেই। এটাই চিকিৎসকের পরামর্শ। কানাডার কোনও নাগরিকের পরিবারে যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হন, তা হলে তাঁদেরও বলব এই ভাবেই নিজেদের গৃহবন্দি করে ফেলতে।’’
কেমন ভাবে দিন কাটাচ্ছেন ট্রুডোর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা? কানাডার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ছেলেমেয়েরা সকাল থেকেই মেতে আছে ‘লেগো’ খেলায়। আর তাঁর স্ত্রী সোফিয়া বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সারা দিন আড্ডা মেরে যাচ্ছেন টেলিফোনে।
ছেলেমেয়েরা কি জানে কেন ট্রুডোর এই ‘সেল্ফ-আইসোলেশন’? কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ওদের সব বলেছি। বুঝিয়েছি। ওরা মন দিয়ে সে সব শুনেছে।’’