বর্মবস্ত্র পরেই স্কুটারে সওয়ার। ব্রিটেনের মারগেটে। রয়টার্স
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস)-র কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। নাম নিয়েছিলেন দুই অভিবাসী নার্সের যাঁরা টানা ৪৮ ঘণ্টা পাশে ছিলেন তাঁর। মূলত তাঁদের সেবা না-পেলে ‘পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেত’ বলেও মেনে নিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। আর তাঁর এই স্বীকারোক্তিই আপাতত ঝড় তুলেছে ব্রিটেনের সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মাত্র কয়েক মাস আগেই ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছিল, এনএইচএস আসলে ‘জাতীয়’ স্বাস্থ্য পরিষেবা, ‘আন্তর্জাতিক’ নয়। এমনকি করোনা-সঙ্কটের মধ্যেই নয়া অভিবাসী নীতির পক্ষে সওয়াল করে প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পটেলকেও। বিদেশ থেকে আসা ‘অদক্ষ’ কর্মীদের একেবারেই গুরুত্ব দিতে চাইছিলেন না প্রীতি। এখন অবশ্য সেই ব্রিটিশ সরকারকেই কার্যত মেনে নিতে হচ্ছে, দেশের এই স্বাস্থ্য পরিষেবার শিরদাঁড়া হলেন ব্রিটেনের বাইরে থেকে আসা অভিবাসী কর্মীরা। তাঁদের দিন-রাত পরিশ্রমের ফলে প্রধানমন্ত্রীর মতো অসংখ্য করোনা-আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ তাই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তা হলে কি এ বার অভিবাসীদের জন্য নীতি বদলাতে চলেছে ব্রিটিশ সরকার?
লুই পিতারমা ও জেনি ম্যাকজি— পর্তুগাল এবং নিউজ়িল্যান্ড থেকে আসা এই দুই নার্সের সঙ্গে আরও জনা দশেক স্বাস্থ্য কর্মীর নাম কাল নিয়েছেন বরিস। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাঁদের। লুই এবং জেনিই টানা দু’দিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিউটি করেছেন। তাঁরা আদতে কোন দেশের বাসিন্দা, সেটাও নিজের বিবৃতিতে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। আর এর থেকেই অনেকে মনে করতে শুরু করেছেন, যে অভিবাসীদের জন্য ব্রিটিশরা নিজেদের দেশের দরজা সব সময়ে বন্ধ করে দিতে চাইতেন, তাঁদের প্রতি মনোভাব পাল্টাতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
আরও পড়ুন: করোনায় বন্দি দশার মধ্যেই জন্মদিনে গোটা বিশ্বের শুভেচ্ছা পৌঁছল কিশোরে কাছে
বরিসের জীবনীকার সনিয়া পার্নেল তাঁর টুইটে লিখেছেন, ‘‘চার মাস আগে এই সব অভিবাসী কর্মীকেই ব্রিটেনকে নিজেদের দেশ বলে ভাবা বন্ধ করতে পরামর্শ দিয়েছিল সরকার। আমি শুধু ভাবছি এই বিদেশি অভিবাসী নার্সেরাই যদি বরিসের চিকিৎসার সময়ে সরকারের সেই পরামর্শের কথাটা ভাবতেন, তা হলে কী হত।’’ একই সুরে বরিস সরকারকে ঠুকেছেন ল্যানসেট পত্রিকার সম্পাদক রিচার্ড হর্টনও। তিনি বলেছেন, ‘‘হাউস অব কমন্সে যে ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা এখন এনএইচএস কর্মীদের জন্য হাততালি দিচ্ছেন, দু’বছর আগে তাঁরাই এই সব অভিবাসী নার্সের বেতন বৃদ্ধির রাস্তা বন্ধ করার জন্য একটি বিল পাশ করিয়ে অনেক হাততালি দিয়েছিলেন।’’
আরও পড়ুন: এক বছর বন্ধ দেশ! ভাবছে ব্রিটিশ প্রশাসন
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)