এই নিয়ে চিনের মোট ১৯টি শহর এখন ‘তালাবন্ধ’। ছবি: সংগৃহীত।
আরও একটি শহরকে তালাবন্ধ করল চিন। করোনাভাইরাসের উত্সস্থল উহান থেকে আটশো কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জেঝিয়াং প্রদেশের ওয়েংঝউ শহরকে এ বার তালাবন্ধ করল চিন। এই নিয়ে চিনের মোট ১৯টি শহর এখন ‘তালাবন্ধ’। সব মিলিয়ে ‘আটক’ অন্তত ছয় কোটি বাসিন্দা। পরিবহণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে ওই শহরগুলোর। ঠিক যেন ‘জরুরি অবস্থা’ জারি হয়েছে চিনে।
উহানের পর চিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে এই ওয়েংঝউ শহরেই। জেঝিয়াং প্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬১ জন। তার মধ্যে এই ওয়েংঝউ শহরেই আক্রান্ত হয়েছেন ২৬৫ জন। সে কারণেই এই শহরকেও তালাবন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন সরকার।
একটি পরিবারের যে কোনও একজন সদস্য প্রতি দু’দিন অন্তর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য শহরের বাইরে বেরতে পারবেন। এমনই নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আগেই অবশ্য শহরের প্রতিটি পাবলিক প্লেস যেমন সিনেমা হল, মিউজিয়াম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ৯০ লাখ মানুষের বাস এই শহরে। তালাবন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: মেয়েকে বাঁচান, হুবেইয়ে আর্তি মায়ের
কিন্তু এত সব করেও মৃত্যুমিছিল থামছে না। রবিবারই অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসের হানায়। ফলে চিনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬০। তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই মুহূর্তে যা প্রায় ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২০০২-০৩ সালে চিন ‘সার্স’-র ভয়াবহতা দেখেছে। ওই সময় চিনের মূল ভূখণ্ডে ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার পর ফের এমন এক ভয়ঙ্কর ভাইরাসের হানা। এই ভাইরাস ক্রমশ চিন ছাড়িয়ে অন্য দেশে পাড়ি দিয়েছে। ভারত, ইংল্যান্ড-সহ বিশ্বের ২৪টি দেশে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ফিলিপিন্সে এক আক্রান্তের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
আরও পড়ুন: এই প্রথম নয়, নতুন নতুন রূপে ফিরে আসে আতঙ্কের করোনাভাইরাস
রোগের উৎস বলে সন্দেহ করা হচ্ছে সি-ফুড ও মাছ-মাংসের বাজারকে। অভিযোগ বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীর মাংস বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হত এই সব বাজারে। সব চেয়ে বেশি সন্দেহ, কালাচ ও কোবরা থেকে নোভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। বিশ্ব জুড়েই ভাইরাসকে রোধের গবেষণা চলছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোনও প্রান্তের চিকিত্সকেরাই কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেননি।