ছবি: এএফপি।
কয়েক দিন ধরেই আভাস মিলছিল। করোনার স্থানীয় সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমছিল চিনে। হুবেই-সহ বিভিন্ন প্রদেশে গত তিন দিন নতুন সংক্রমণের খবরই ছিল না। কিন্তু ছন্দ কাটে গত কাল। দেখা যায়, দেশে নতুন করে ৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ৫৪ জনই সম্প্রতি বিদেশ থেকে এসেছেন। এক জনের স্থানীয় সংক্রমণ। তাই বিদেশ থেকে আসা সংক্রমণ ঠেকাতে সক্রিয় হয়েছে শি চিনফিং প্রশাসন।
আপাতত স্থির হয়েছে, বিদেশি পর্যটকেরা এ দেশে ঢুকতে পারবেন না। বৈধ ভিসা বা ‘রেসিডেন্স পাস’ থাকলেও। কমছে আন্তর্জাতিক উড়ান। উড়ানে কিছু নিষেধাজ্ঞা অবশ্য আগেও ছিল। সম্প্রতি নিয়ম কিছুটা শিথিল হলেও নতুন সংক্রমণ আটকাতে ফের কড়া হচ্ছে চিন। তবে বিদেশে থাকা চিনা নাগরিকেরা দেশে ঢুকতে পারছেন। যে সব উড়ানের ৭৫ শতাংশ আসন ভরছে, সেগুলিই শুধু চিনের মাটি ছোঁয়ার অনুমতি পাচ্ছে। ছাড় দেওয়া হয়েছে কূটনীতিকদের। প্রবেশে বাধা নেই উড়ান সংস্থার কেবিন ক্রুদেরও। কত দিন এই কড়াকড়ি, স্পষ্ট করেনি চিনা বিদেশ মন্ত্রক। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ৮ এপ্রিল থেকে পুরোদস্তুর খুলতে পারে উহান শহর।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উহান গত ২৩ জানুয়ারি থেকে তালাবন্ধ। খুব জরুরি দরকার ছাড়া রাস্তায় বেরোনো নিষিদ্ধ। দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ট্রেন, বাস, ফেরি, মেট্রো-সহ যাবতীয় গণপরিবহণ। জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে এখনও পর্যন্ত ৮১,৩৪০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা ৩,২৯২। এ দিকে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং বলেছেন, পরিস্থিতি খুবই গুরুতর, কিন্তু অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে তাঁরা যথাসাধ্য করছেন।
ইটালিতে আজ রেকর্ড গড়ে মৃত্যু হয়েছে ৯৬৯ জনের। ইটালির উত্তরে কিছুটা হলেও কমেছে সংক্রমণ। লমবার্ডির মতো এলাকায় মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কমেছে নতুন করে সংক্রমণের হারও। তুলনামূলক দরিদ্র দক্ষিণ ইটালির বিভিন্ন এলাকায় হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। করোনা-সংক্রমণে এখনও পর্যন্ত ইটালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ছুঁইছুঁই। মারা গিয়েছেন আট হাজারেরও বেশি মানুষ। সেরে উঠেছেন ১০,৩৬১ জন। মৃত্যুমিছিল চলছে স্পেনেও। গত কালই সেখানে মৃত্যু ৪ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা স্পেনে ৭৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক দিনে সর্বোচ্চ। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ৪,৮৫৮। ফ্রান্সে আরও ২৯৯ জনের মৃত্যুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯৯৫। বাতিল হয়েছে ফ্যাশন উইক। ইরানে কিছুটা হলেও কমেছে মৃত্যুর হার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৪ জন মারা গিয়েছেন সেখানে। মোট মৃতের সংখ্যা ২,৩৭৮, আক্রান্ত ৩২,৩৩২ জন। সেরে উঠেছেন ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ।
চিন্তিত আফ্রিকার দেশগুলিও। তিন সপ্তাহের লকডাউনের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকায় এই প্রথম দু’জন মারা গিয়েছেন করোনায়। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় হাজার। পুরোপুরি লকডাউন না হলেও দেশের মানুষের গতিবিধিতে রাশ টানতে চলেছে রাশিয়া। কাল থেকে সমস্ত কাফে, রেস্তরাঁ বন্ধ হচ্ছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলিকে আজ অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সম্প্রতি কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে তাঁর।