ছবি এএফপি
‘ইমিউনিটি পাসপোর্ট’। ব্যাপারটা এ রকম— করোনা হয়তো হামলা করেছিল। কিন্তু কোনও উপসর্গ দেখা দেয়নি, রোগী জানতেও পারেননি রোগের কথা। তাঁর নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউনিটি) শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে নিয়েছে। বিশ্বের কয়েকশো কোটি বাসিন্দার মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁদের কাছে রয়েছে এই ‘পাসপোর্ট’। দেশের এমন বাসিন্দাদের খোঁজ শুরু করতে চলছে ব্রিটেন।
বহু দেশই ‘ইমিউনিটি পাসপোর্ট’-এর সন্ধানে অ্যান্টিবডি টেস্ট করাতে শুরু করে দিয়েছে। অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। ‘পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড’ আজ জানিয়েছে, তাদের ব্যবহার করা অ্যান্টিবডি টেস্ট পদ্ধতিটি তৈরি করেছে সুইস ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা রোশে। ব্রিটেনের ‘করোনাভাইরাস টেস্টিং প্রোগ্রাম’-এর প্রধান জন নিউটনের মতে, খুবই আশাব্যঞ্জক পরীক্ষাটি। অতীতেও অন্য সংক্রমণের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরীক্ষা কাজ দিয়েছে। এ ভাবে রক্তপরীক্ষা করে দেখা হবে তাতে করোনার অ্যান্টিবডি রয়েছে কি না।
নিউটন বলেন, ‘‘অ্যান্টিবডি টেস্ট হলে বোঝা যাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভবিষ্যতে সংক্রমিত হলে, তা রুখতে পারবেন কি না। কিন্তু সংক্রমণের মাত্রার উপরেও কিছুটা নির্ভর করবে। বেশি মাত্রায় সংক্রমিত হলে রক্তে উপস্থিত অ্যান্টিবডি কাজ দেবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।’’
আরও পড়ুন: অধ্যাপক আনিসুজ্জামান: চলে গেলেন আশ্রয়ের মহীরুহ
ব্রিটেনে ৪০ হাজারেরও বেশি লোক মারা গিয়েছেন। কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আশা এই অ্যান্টিবডি টেস্ট-ই ‘গেমচেঞ্জার’ হবে। প্রশাসনের অন্য এক কর্তাও বলছেন, ‘‘সংক্রমণ রুখতে আমাদের অন্যতম পদক্ষেপ হতে চলেছে এই টেস্ট।’’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য বলছে, যত যা-ই করা হোক না কেন, এই ভাইরাস যাওয়ার নয়। একে নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। যে ভাবে এইচআইভি থেকে গিয়েছে পৃথিবীতে। বরং এর পাশাপাশি বিশ্ব জুড়ে বাসা বাঁধতে পারে মনের রোগও। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এখন থেকেই সেই নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করার জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে সব দেশ মানুষের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে ভেবে যাচ্ছে। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের কথা কেউ ভাবছে না। মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস আজ এক ভিডিয়ো-বার্তায় বলেন, ‘‘মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কয়েক দশকে কেউ ভাবেনি। বরং উপেক্ষা করে এসেছে। করোনা-অতিমারি সরাসরি মানুষের পরিবার, কোনও এলাকা বা দেশে ভাঙন ধরাচ্ছে।’’ গত পাঁচ মাসে বিশ্বে তিন লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। গুতেরেস বলেন, ‘‘অতিমারি হয়তো যখন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, তখনও দেখা যাবে মানুষ ভয়ে, হতাশায় রয়েছেন। তাঁরা নিজের প্রাণ নিয়ে ভয় পাবেন, প্রিয়জনকে হারানোর ভয় পাবেন।’’
আরও পড়ুন: লকডাউন তুলে নেওয়ায় কোন দেশে কত বাড়ল আক্রান্তের সংখ্যা, জানেন কি?