ছবি: রয়টার্স।
ব্রিটিশ মিডিয়া সূত্রে গত কালই জানা গিয়েছে, বড়দিনের মধ্যে সুখবর দিতে পারে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এ বার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কথাতেও একই ইঙ্গিত মিলল।
ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করোনার টিকা তৈরি করছে অক্সফোর্ড। তাদের নাম না-করলেও একটি প্রথম সারির সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বরিস বলেন, ‘‘আমার আশা, আগামী কয়েক সপ্তাহ, বিশেষ করে কয়েক মাসে সমীকরণ অনেকটাই বদলে যাবে। সেটা ভ্যাকসিন তৈরিই হোক কিংবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। করোনাভাইরাসকে হারাতে যে লড়াইটা চলছে, তাতে অনেকটা অগ্রগতি করব আমরা। অতএব আশা করছি, বড়দিনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বদল এসে যাবে। আর সামনের বছর বসন্তের মধ্যে বড়সড় পরিবর্তন ঘটে যাবে।’’ কিন্তু তার আগে পর্যন্ত যে ভালই ঝড়-ঝাপ্টা যাবে, সে কথা ফের মনে করিয়ে দিলেন বরিস। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘কোভিড-১৯-কে আমরা হারাবোই, কিন্তু তার আগে পর্যন্ত সাধারণ বিচারবুদ্ধি কাজে লাগিয়ে যা করার করুন।’’ শীতকালে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে বলে বারবার সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিটেনে দৈনিক সংক্রমণ ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। স্পেনেও গত কয়েক সপ্তাহে এক দিন সংক্রমণ ১০ হাজারের বেশি। নতুন করে আক্রান্ত বাড়ছে ইটালিতেও। গত সপ্তাহে একটি ভিডিয়ো বার্তায় ইটালির কাম্পানিয়ার প্রেসিডেন্ট বিনসেনজ়ো ডি লুকা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ইটালিতে যদি এ ভাবেই সংক্রমণ বাড়তে থাকে, ফের লকডাউন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে রাস্তাঘাটে। হাতে নিয়ে ঘুরলে চলবে না।’’
আরও পড়ুন: আগামী ক’টা দিনই আসল পরীক্ষা: ট্রাম্প
আরও পড়ুন: বড়দিনের মধ্যেই কি টিকার সুখবর দেবে অক্সফোর্ড
ইউরোপে সব চেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি হয়েছিল ইটালির। তারা সেরেও ওঠে সবার প্রথমে। এই মহাদেশে ইটালিই প্রথম সীমান্ত খুলে দেয়। রাস্তাঘাটেও ফের মাস্কহীন লোকের ভিড় চোখে পড়ে। কলেজ, পাবে লোকে মাস্ক ছাড়াই যাওয়া শুরু করে দিয়েছিলেন। জুন মাসে নিজেদের ‘কোভিড-মুক্ত’ বলে ঘোষণা করেছিল কাম্পানিয়া। কিন্তু ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলটি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের। ডি লুকা বলেন, ‘‘যা অবস্থা তাতে, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিলের মতো কড়াকড়ি শুরু করতে হবে ফের। না-হলে আবার সবাই অসুস্থ হতে শুরু করবেন।’’
সংক্রমণ বাড়ায় নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও আজ ঘোষণা করেছেন, শহরের ব্রুকলিন ও কুইন্সের ন’টি এলাকায় স্কুল এবং জরুরি নয় এমন ব্যবসাপত্র ফের বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। গত সাত দিনে ৩ শতাংশ সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে অঞ্চলগুলিতে। ডি ব্লাসিও বলেন, ‘‘খুব কঠিন সময় চলছে।’’ গভর্নর অ্যান্ড্রু এম কিউমো অনুমতি দিলেই মেয়রের পরিকল্পনামতো লকডাউন জারি হবে।
রাশিয়াতেও দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে দশ হাজার ছাড়িয়েছে। মে মাসের পর থেকে কিছুটা কমেছিল সংক্রমণ। তবে এখনই লক ডাউনের কথা ভাবছে না সরকার। রাশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখের উপরে। বিশ্বের তালিকায় চতুর্থ স্থানে তারা।। মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৪৬ হাজার রুশ।
জার্মানিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও কড়াকড়ি কমাতে চায় না সরকার। আসন্ন শীত নিয়ে চিন্তায় তারা। দক্ষিণ জার্মানিতে গত শনিবার ফের সরকারি কড়াকড়ির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান হাজার খানেক মানুষ। লেক কনস্ট্যান্সে মানবশৃঙ্খল তৈরি করে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। পরিস্থিতি সামলাতে নাকানিচোবানি খায় পুলিশ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং সরকারের প্রতি সমর্থন জানাতে পাল্টা বিক্ষোভে নামেন হাজার খানেক লোক।