Narendra Modi

Narendra Modi: বেছে নিন কম দূষণের জীবন, গ্লাসগোয় মোদী

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, দূষণ কমানোর প্রশ্নে চোখ-কান বুজে শুধু কার্বন নিঃসরণ কমানোর কথাই বলে আসছে আন্তর্জাতিক সব মঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১ ০৭:২২
Share:

জলবায়ু সম্মেলনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার গ্লাসগোয়। ছবি: রয়টার্স।

গ্লাসগোয় আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন ‘সিওপি২৬’ সম্মেলনে আজ প্রারম্ভিক পর্বে বললেন দু’মিনিট। পরের দফার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবিস্তার জানালেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভারতের লক্ষ্য এবং দৃষ্টিভঙ্গি। জানালেন, ২০৭০ সালের মধ্যে ভারত গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনবে। তার আগে, ২০৩০ সালের মধ্যে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে অন্তত ৫০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। বিদ্যুতের অর্ধেক চাহিদা মেটাবে সৌরশক্তির মতো পুনর্ব্যবহারযোগ্য উৎস থেকে। এতে অনেকটাই কমে আসবে কার্বন দূষণের মাত্রা।

এ হল ভারতের লক্ষ্য। তার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পাঁচটি মন্ত্র, মোদীর ভাষায় ‘পঞ্চামৃত’, প্রস্তাব আকারে পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চুম্বকে তা হল, বেছে নিতে হবে কম দূষণকারী জীবনশৈলী। তা হতে পারে নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে এবং চিরাচরিত জীবনধারা থেকে শিক্ষা নিয়ে। গ্রহণ করতে হবে অভিযোজন তথা অ্যাডাপটেশনের নীতি। প্রকৃতির নির্বিচার ব্যবহার থামাতে হবে। গাঁধীর আদর্শে চলে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে হবে প্রকৃতির সঙ্গে। জলবায়ু বদল ঠেকাতে অর্থ ও প্রযুক্তি অবশ্যই ভাগ করে নিতে হবে বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে। উন্নত দেশগুলিকে জলবায়ু খাতে এক ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করার আহ্বান জানিয়েছেন মোদী।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, দূষণ কমানোর প্রশ্নে চোখ-কান বুজে শুধু কার্বন নিঃসরণ কমানোর কথাই বলে আসছে আন্তর্জাতিক সব মঞ্চ। এতে মূলত কলকারখানার উৎপাদনে কোপ পড়ে। কিন্তু উন্নত দেশগুলির পক্ষে যেটা সম্ভব, উন্নয়নশীল দেশগুলির পক্ষে তা কঠিন। দূষণ কমাতে কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়া বা উৎপাদন কমানোটা উন্নয়নশীল দেশগুলির লক্ষ্যের সঙ্গে মেলানোটা খুবই শক্ত কাজ। দুই ধরনের দেশকে এক মাপকাঠিতে মাপা তাই ঠিক নয় বলে দাবি করেন মোদী। তাঁর মতে জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে চাইলে কার্বন দূষণ কমানোই শেষ কথা নয়। জোর দিতে হবে অভিযোজন তথা অ্যাডাপটেশনে। পরিস্থিতির সঙ্গে জীবনধারাকে এমন ভাবে খাপ খাইয়ে নিতে হবে যাতে দূষণ কম হয়, আবার মানুষের জীবনযাত্রার মানেরও উন্নতি হয়।

মোদী উল্লেখ করেন স্থানীয় স্তরে, প্রাচীন জীবনশৈলীতে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দূষণ কম ঘটায়। নজর দিতে হবে সেই সব দিকে। বিশ্বকেও ওই ধরনের জীবনশৈলীর প্রসারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে স্কুলেও পড়াতে হবে এই ধরনের জীবনশৈলীর কথা। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ভারত এই অভিযোজনের নীতি নিয়েই চলছে। যার সুফল পাচ্ছে বিশ্বও। মোদীর বক্তব্য পানীয় জলের পরিকাঠামো গড়াই হোক বা নির্মাণ শিল্প, প্রতি ক্ষেত্রেই এমন পদ্ধতি নেওয়া জরুরি, যাতে দূষণ কম ঘটে। ভারত সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। ভারতের উন্নয়নে ‘অ্যাডাপটেশন’ নীতি তাই বড় ভূমিকা পালন করছে। কম দূষণকারী জীবনশৈলী গ্রহণের সুফল বুঝতে হবে বিশ্ব্রকে। তাঁর মতে, এই ‘অ্যাডাপটেশন’-কে আন্তর্জাতিক জলবায়ু নীতির কেন্দ্রে আনতে হবে।

Advertisement

মোদী এটাও বোঝাতে চেয়েছেন যে, জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের দায় এবং দায়বদ্ধতা আদৌ কম নয়। বরং বেশি। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খরা, বন্যা বা বৃষ্টির খামখেয়ালিপনায় ভারতই বিপদে পড়ে বেশি। তাই জল সংরক্ষণ বা সদ্‌ব্যহারের মতো চিরাচরিত স্থানীয় রীতিনীতিকে আরও বেশি জানা ও প্রয়োগ করা হচ্ছে দেশে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement