ফুলের পাপড়ির মতো দেখতে একটি সোনার পাত। ব্যাস ২১ মিলিমিটার। এটি নাকি স্তনবৃন্তের আচ্ছাদনী!
২০১১ সালে আমেরিকার একটি নিলাম ঘরে বিক্রির জন্য আসে এটি। একটি গোলাকার চাকতির মতো অংশ, গয়নার মতোই ব্যবহার করা হত এগুলি। তার মধ্যে কয়েকটি দেখতে স্তনবৃন্তের মতো। এমনই বেশ কিছু প্রসাধনী এসেছিল নিলাম ঘরের হাতে।
আর তখন থেকেই শুরু বিতর্ক। এটিকে কয়েক জন প্রত্নতত্ত্ববিদ বলেছিলেন, স্তনবৃন্তের আচ্ছাদন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন অনেকে। বলেছিলেন, এ জাতীয় জিনিস নিলামে বিক্রি করা কুরুচিকর!
বেশ কয়েক জন প্রত্নতত্ত্ববিদের মতে, যৌনতা নিয়ে ছুঁৎমার্গ না থাকায় প্রাচীন আমলে অর্থাত্ প্রায় ১০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ রোমানরা নাকি এই নিপল কভার ব্যবহার করতেন। কিন্তু এটি নিয়ে প্রত্নতত্ত্ববিদদের মধ্যে বিতর্কও হয়।
কেউ বলেন, পম্পেইয়ের যৌন কর্মীরা এটি ব্যবহার করতেন। ডেভিড মিয়াডোস নামে এক প্রত্নতত্ত্ববিদ দাবি করেন, ১০০ খ্রিস্টাব্দে যৌনকর্মীদের মধ্যে এটির ব্যবহার অসম্ভব। তিনি বলেন, রোমানরা ফালেরা ব্যবহার করতেন। এটিও এক ধরনের ধাতব বক্ষবন্ধনী।
মাইক বিশপ নামে অপর প্রত্নতত্ত্ববিদের দাবি, এর উৎপত্তি মিশরে। মমিদের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হত এটি।
১০০০ খ্রিস্টপূর্বের একটি মমি, মৃত্যুকালে যার বয়স ১৩ বছর ছিল, সেটির মধ্যে এর অস্তিত্ব মিলেছিল প্রথম। যা দেখে মনে করা হয়েছিল, এই জাতীয় গোল্ড অ্যামিউলেট মহিলারাই পরতেন।
১৯২০ সাল নাগাদ বেলি ডান্সার বা লিটল ইজিপ্ট ডান্সারদের ক্ষেত্রে এ জাতীয় প্রসাধনী দেখতে পাওয়া গিয়েছে। খ্রিস্টীয় প্রথম শতক কিংবা ১৯ শতকের আমেরিকাতেও যৌনপল্লিতে নাকি এরকম আচ্ছাদনী পরার চল ছিল।
কিন্তু নৃতত্ত্ববিদ ভার্জিনিয়া হাটন ইস্ট্রাবুক লিটল ইজিপ্টের বেলি ডান্সারদের পোশাক দেখে বলেন, ১৯০৬ সাল নাগাদ এই পোশাকের চল ছিল। ‘সালোমানিয়া’ ছবিতেও এমন দেখা গিয়েছে। তবে আমেরিকান সোসাইটি একে কুরুচিকরই বলেছিল।
একদল বলেছিলেন এটি আসলে প্রাচীন ঘোড়ার জিনের অংশ। কিন্তু স্তনবৃন্তের আচ্ছাদন বলে নিলাম ঘর এটি বিক্রি করায় বিতর্ক হয়। এটি কয়েক কোটি টাকায় বিক্রি হওয়ার পরও তাই বিক্রেতার নাম গোপন রাখা হয়। তবে এই আচ্ছাদন আরও বেশ কয়েকটি রয়েছে নিলাম ঘরের কাছে।