দেশ জুড়ে অবাধ যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী। ধর্ষণ, মানসিক ও শারীরিক নিগ্রহের পাশাপাশি চলছে মানহানি এমনকী ব্ল্যাকমেলিংও। গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত মিশরের প্রথম প্রেসিডেন্টকে ২০১৩-য় ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই চলছে এই অরাজকতা। আজ এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। মুরসির মৃত্যুদণ্ড ঘিরে ইতিমধ্যেই অশান্তি ছড়িয়েছে মিশরের একাংশে। তার পর এই অভিযোগ উঠে আসায় পিরামিডের দেশে অশান্তি এক অন্য মাত্রা নেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বছর দুয়েক আগেই মুরসিকে উৎখাত করে মিশরের সেনাবাহিনী। দেশের নয়া প্রেসিডেন্ট হন আব্দেল ফতাহ অল-সিসি। মুরসির বিরুদ্ধে সে বার ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। তাঁর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভে সামিল হন দেশের একটা বড় অংশ। এ বার তার চেয়েও ভয়াবহ অভিযোগ উঠল খোদ অল-সিসির সেনার বিরুদ্ধেই।
কিন্তু কারা এই যৌন নির্যাতনের শিকার? সংগঠনটির দাবি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রী— সেনার যৌনলিপ্সা থেকে রেহাই পাচ্ছে না কেউই। সরকারি তরফে অবশ্য এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মতামত মেলেনি। মুখ খোলেননি ইরাকি সেনার মুখপাত্রও।
সংগঠনটির আরও অভিযোগ, অল-সিসি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা শুরু করে কায়রো। সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড় ও বিচার। গত দু’বছরে কয়েক হাজার ব্রাদারহুড কর্মীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে। জেলখানায় বন্দিদের উপর অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগ মিলেছিল আগেই। এ বার সেনা-শাসনে অভিযোগ উঠল যৌন নির্যাতনের।
সংগঠনটির সভাপতি করিম লাহিদজি বলেন, ‘‘এতে অবশ্য তাজ্জব হওয়ার কিছু নেই। বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে বিশ্বের ইতিহাসে বরাবর এমনটাই ঘটে এসেছে। মিশরেও ঠিক তাই। ক্ষমতা হাতে পেয়েই দাঁত-মুখ বের করেছে দেশের সেনা।’’
দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অবশ্য মনগড়া নয়। সংগঠনটির দাবি, একাধিক নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, সব জেনেও হাত গুটিয়ে প্রশাসন।