International News

চিনকে ভাঙার চেষ্টা মেনে নেব না, ফের হুঙ্কার শি চিনফিং-এর

চিনের প্রেসিডেন্ট ফের ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন। চিনের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে চিন তা কিছুতেই মেনে নেবে না বলে চিনফিং জানালেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ১৫:৩৪
Share:

চিনা প্রেসিডেন্ট

ফের চড়া বয়ান প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর। যে কোনও অনুপ্রবেশকারীকে হারানোর মতো আত্মবিশ্বাস চিনের রয়েছে। চিনের সশস্ত্র বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ৯০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে মঙ্গলবার ফের এ কথা বললেন চিনফিং। ভারতের নাম করে তিনি কিছু বলেননি। কিন্তু তাঁর ইঙ্গিত যে ডোকলাম সঙ্কটের দিকেই, তা নিয়ে কোনও সংশয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের নেই। চিনের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার পক্ষে ক্ষতিকর কোনও বিষয়কে চিন কিছুতেই সহ্য করবে না, এমন মন্তব্যও এ দিন করেছেন চিনা প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

কয়েক দিন আগে থেকেই চিনে শুরু হয়েছে পিএলএ-র ৯০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের উৎসব। ১৯২৭ সালের ১ অগস্ট পিএলএ গঠন করা হয়েছিল। আজই সেই তারিখ। তাই ৯০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের মূল কর্মসূচি ছিল এ দিনই। চিনা প্রেসিডেন্ট সেখানে নিজের ভাষণে বলেছেন, ‘‘চিনের মানুষ শান্তিপ্রিয়। আমরা কখনও আগ্রাসন দেখাব না, সম্প্রসারণও চাইব না। কিন্তু সমস্ত অনুপ্রবেশ রোখার আত্মবিশ্বাস আমাদের রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কোনও ব্যক্তি, সংগঠন বা রাজনৈতিক দল যদি চিনের কোনও অংশকে চিনের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়, আমরা তা কখনওই মেনে নেব না।’’

ডোকলাম নিয়ে যে শেষ পর্যন্ত সমঝোতার পথই নিতে হচ্ছে চিনকে, তা স্বীকার করলে চিনা জাতীয়তাবাদে ঘা লাগতে পারে বলে বেজিং মনে করছে। সেই কারণেই প্রেসিডেন্ট চিনফিং বার বার নিজের বাহিনীর সক্ষমতার বড়াই করছেন। বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ছবি: এপি।

Advertisement

ডোকলামে ভারতীয় ও চিনা সেনার মধ্যে টানাপড়েন শুরু হওয়ার পর থেকে চিন বার বার বলছে, ভারতীয় সেনা চিনের এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছে। চিনের সেই অভিযোগ কিন্তু ভারত ও ভুটান নস্যাৎ করছে। ডোকলাম চিনের এলাকা নয়, ভুটানের এলাকা— বার বার বলছে নয়াদিল্লি এবং থিম্পু। বিবাদের ফয়সলা না হওয়ায় ভারত এবং চিন ডোকলামে বিশাল বাহিনী পাঠিয়েছে, দু’মাস ধরে দুই বাহিনী সেখানে মুখোমুখি অবস্থানে। তবে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, চিনের অবস্থান আগের চেয়ে নমনীয় হয়েছে। ডোকলাম থেকে ভারত সেনা সরালে চিনও সেনা সরিয়ে নেবে বলে দু’দেশের মধ্যে কথা হয়েছে। কিন্তু কথা যেমনই হয়ে থাক, চিনা কর্তৃপক্ষ নিজেদের সামরিক সক্ষমতার বড়াই করা এখনও বন্ধ করতে পারছেন না।

আরও পড়ুন: উত্তরাখণ্ডে ফের চিনা অনুপ্রবেশ

১৯৬২ সালের পরে আর কখনও ভারত এবং চিনের মধ্যে এত বড় টানাপড়েন দেখা যায়নি। এই সুদীর্ঘ টানাপড়েন চলাকালীন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কিন্তু মন্তব্যের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সংযম দেখিয়েছেন। কখনও সেনাপ্রধান, কখনও প্রতিরক্ষামন্ত্রী, কখনও বিদেশমন্ত্রী চিনা হুঁশিয়ারির জবাব দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু আগ বাড়িয়ে চিনের নিন্দা বা সমালোচনার পথ ভারত নেয়নি। চিনই বরং সরকারি সংবাদমাধ্যম, বিদেশ মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে কাজে লাগিয়ে বার বার যুদ্ধের হুমকি দিতে থেকেছে। অজিত ডোভালের চিন সফরের পরে চিনের সেই সুর কিছুটা নরম। চিনা বিদেশ মন্ত্রক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বা মিডিয়া যে ভাবে নিয়ম করে রোজ আক্রমণ করছিল ভারতকে, তা থেমেছে। কিন্তু চিনা প্রেসিডেন্ট তিন দিনে অন্তত দু’বার নাম না করে ভারতকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার চেষ্টা করলেন। মঙ্গলবারও তিনি বললেন, ‘‘চিনের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব বা উন্নয়নের পক্ষে ক্ষতিকর কোনও বিষয় চিন গিলে নেবে, এমনটা কারও আশা করা উচিত নয়।’’

আরও পড়ুন: চিনা জিনিস কেন সস্তা?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement