ফাইল চিত্র।
ভারতের সঙ্গে তাদের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সক্রিয়তা বাড়াতে ফের মরিয়া চিন। বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই এই অঞ্চলে তিব্বতি যুবকদের মোতায়েনের কাজ শুরু করে তারা। তা নিয়ে তিব্বতের উপর সম্প্রতি চাপ আরও বাড়িয়েছে দেশটি। নয়া নিয়ম অনুযায়ী, তিব্বতের প্রত্যেকটি পরিবার থেকে একজনের চিনের ‘পিপ্লস লিবারেশন আর্মি’ (পিএলএ)-তে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে চিন।
গোয়েন্দারা আরও জানাচ্ছেন, বেজিংয়ের এই নতুন ‘প্রকল্প’ বেশ দ্রুত গতিতেই এগোচ্ছে। নিয়োগের পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকাতেই শুরু হচ্ছে ওই যুবকদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ। নির্বাচিত যুবকদের স্থায়ী ভাবে এই অঞ্চলেই মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়েছে বেজিং। এই এলাকায় বিশেষ অভিযান চালানোর মতো প্রশিক্ষিণও দেওয়া হচ্ছে ওই যুবকদের। এর জন্য পিএলএ-র তত্ত্বাবধানে তাঁদের নিয়মিত মহড়াও চলছে, দাবি গোয়েন্দাদের।
ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বিস্তীর্ণ অঞ্চলই দুর্গম। সেখানকার আবহাওয়াও বেশ খারাপ। মূলত লাদাখ এবং অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে এই নিয়ন্ত্রণ রেখাটি। গোয়েন্দাদের মতে, চিন স্বীকার না-করলেও এই কারণগুলির জেরে এখানে ঘাঁটি গড়তে বেশ বেগ পেতে হয়েছে পিএলএ-কে। সেই পরিস্থিতি কাটাতেই এ বার এই এলাকাগুলিতে এই তিব্বতি যুবকদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত। যার মাধ্যমে এখানে নিজেদের সামরিক অবস্থান মজবুত করতে চাইছে পিএলএ।
চিনা বাহিনীতে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও তা একেবারেই সহজ নয় এই তিব্বতি যুবকদের কাছে, জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা। পরিবার পিছু এক জন করে আসা এই যুবকদের বহু পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে চিনা সেনার কাছে নিজেদের ‘আনুগত্য প্রমাণ করতে হচ্ছে’। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির আধিপত্য স্বীকার করে নিতে হচ্ছে। শিখতে হচ্ছে চিনের রাষ্ট্রীয় ভাষাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা তো বটেই, তার সীমান্তবর্তী তিব্বতের স্ব-শাসিত অঞ্চলে চিনের আধিপত্য কায়েম করতেও স্থানীয় যুবকদের হাতিয়ার করছে চিন। তা ছাড়া, পাহাড়ে ঘেরা এই অঞ্চলে যদি এই তিব্বতি যুবকদের দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়, তা হলে চিনের সেনাবাহিনীর উপর চাপও খানিকটা লাঘব হবে।