ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে আপাতত মুখোশই ভরসা পর্যটকদের। বেজিং বিমানবন্দরে এপি-র তোলা ছবি।
শহর ছেড়ে বাইরে যেতে পারবে না কোনও উড়ান। শহরের ভিতরে সমস্ত পরিবহণ ব্যবস্থা আপাতত বন্ধ করার তোড়জোড় চলছে। রেল স্টেশনে দেখা মিলছে না যাত্রীদের। অধিকাংশ স্টেশনের গেটে ঝুলছে তালা। নোভেল করোনাভাইরাস (২০১৯-এনসিওভি)-এর আতঙ্কে এমনই অবস্থা চিনের উহান শহরে। ভাইরাসের মোকাবিলায় ওই শহরকে কার্যত নজরবন্দি করে ফেলেছে স্থানীয় প্রশাসন। এক কোটি ১০ লক্ষ জনবসতির উহান শহর এখন আক্ষরিক অর্থেই খাঁ খাঁ করছে।
চিনের হুবেই প্রদেশের এই শহরে ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। সংক্রমণ ঘটেছে প্রায় ৬০০ জনের দেহে। চিন ছাড়িয়ে এটি দেখা গিয়েছে জাপান, তাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়াতে। এমনকি সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলেও থাবা বসিয়েছে এই ভাইরাস।
অনেকের আশঙ্কা, বিশ্ব জুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। তবে বিশ্ব জুড়ে ঠিক কত জন এতে আক্রান্ত হয়েছেন, তা নিয়ে কোনও সামগ্রিক ছবি মেলেনি। যদিও বুধবার একটি অসমর্থিত রিপোর্টে প্রকাশ, লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের দাবি, কেবলমাত্র উহান শহরেই ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চার হাজার মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। চিনের তরফে সরকারি ভাবে অবশ্য বুধবার পর্যন্ত ৫৭১ জনের ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। চিনের ন্যাশনাল হেল্থ কমিশন জানিয়েছে, আরও ৩৯৩ জনের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে সন্দেহ করছেন তারা।
আরও পড়ুন: সৌদি যুবরাজের সঙ্গে ডিনারের মাসখানেক পরই বেজোসের ফোনে ফাঁদ, দাবি তদন্তকারীদের
শুধু উহান শহরের বাসিন্দাদের প্রতিই নয়, এই ভাইরাস মোকাবিলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও। শনিবার চিনা নববর্ষ শুরু হচ্ছে। সেই উপলক্ষে নিজের দেশের পথে পা বাড়িয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা চিনা মানুষজন। বেজিং বিমানবন্দরে আসা পর্যটকদের মুখে দেখা গিয়েছে, ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মুখোশ পরে নামছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: শেষ ইচ্ছা জানাল না নির্ভয়া-কাণ্ডের চার দণ্ডিত, ফাঁসির দিনক্ষণ নিয়ে জোরালো হচ্ছে সংশয়
স্বাস্থ্য আধিকারিকদের আশঙ্কা, সপ্তাহান্তে এই ভাইরাসে সংক্রমণের হার আরও বাড়বে। তবে তাঁরা এখনও এই ভাইরাসের উৎস নিয়ে নিশ্চিত নন। মনে করা হচ্ছে, উহান শহরের কোনও বাজারে বন্যপ্রাণির বেআইনি কারবারের সময় এটি নজরে আসে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশে। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনও প্রতিকার মেলেনি। তবে জ্বর এবং শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধার মতো উপসর্গ দেখা দিলেও সতর্ক হতে বলছেন চিকিৎসকেরা। একে বিশ্ববাসীর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা বলে ঘোষণা করা হবে কি না, তা পর্যালোচনা করে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।