মৃতদের মধ্যে অধিকাংশ জনেরই বয়স ৬৫ বছরের বেশি। ছবি এএফপি।
করোনার নতুন উপরূপ ‘বিএফ.৭’ সংক্রমণের দাপাদাপি চিন জুড়ে। সেই আবহে শনিবার করোনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করল শি জিনপিংয়ের সরকার। গত ৩৫ দিনে চিনে করোনায় সংক্রমিত হয়ে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তা জানাল চিনের স্বাস্থ্য দফতর।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে চিনের মেডিক্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান জিয়াও ইয়াহুই জানিয়েছেন, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৯ হাজার ৯৩৮ জনের। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, সেই হিসাবে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বাস্তবে মৃতের সংখ্যা হয়তো এর থেকেও বেশি।
চিনের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, ভাইরাসের কারণে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ৫০৩। কোভিডের সঙ্গে অন্য রোগের কারণে মৃতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪৩৫। মৃতদের মধ্যে ৯০ শতাংশ রোগীর বয়স ৬৫ বছরের উপর।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের শেষ দিকে চিনে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসে। এর পর ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাপট দেখায় ভাইরাস। তবে পরবর্তী সময়ে চিনে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে দাবি করা হয়। গত বছরে চিনে আবার করোনার দাপাদাপি শুরু হয়। সংক্রমণ মোকাবিলায় সে দেশে ‘শূন্য কোভিড নীতি’ চালু করা হয়। কিন্তু কঠোর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গর্জে ওঠেন সে দেশের নাগরিকদের একাংশ। শেষে বাধ্য হয়ে করোনা মোকাবিলায় ‘শূন্য কোভিড নীতি’ প্রত্যাহার করে নেয় বেজিং। এর পর থেকেই আবার চিনে সংক্রমণ বাড়তে থাকে।
চিনে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে বলে দাবি করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। যদিও সরকারি ভাবে সে কথায় সিলমোহর দেওয়া হয়নি। হাসপাতালগুলিতে তিলধারণের জায়গা নেই। শ্মশানেও মৃতদেহের স্তূপ। এমন নানা ছবি ও ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছেয়ে যায়। যদিও ওই ছবি বা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
করোনার নতুন উপরূপের কারণে চিনে সংক্রমণের দাপাদাপিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। এই প্রেক্ষাপটে দৈনিক করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের পরিসংখ্যান প্রকাশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বেজিং। যা ঘিরে আরও উদ্বেগ তৈরি হয়। করোনা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের জন্য চিনকে বার্তাও দেয় হু। এই উদ্বেগের মধ্যেই শনিবার করোনায় মৃত্যু নিয়ে পরিসংখ্যান দিল চিন।