International

গোপনে আকছার ফাঁসি দেওয়া হয়, ‘দুষ্ট রাষ্ট্র’ চিন, বলল অ্যামনেস্টি

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চোখে চিন বড়ই ‘দুষ্ট রাষ্ট্র’। আকছার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় চিনে। সেই দণ্ড কার্যকরও হয় নির্বিচারে। বছরে অন্তত এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় চিনে। কিন্তু বেজিং সেই সংখ্যাটা গোপন রেখে চলেছে বলে চিনকে একহাত নিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ১৭:০০
Share:

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চোখে চিন বড়ই ‘দুষ্ট রাষ্ট্র’। আকছার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় চিনে। সেই দণ্ড কার্যকরও হয় নির্বিচারে। বছরে অন্তত এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় চিনে। কিন্তু বেজিং সেই সংখ্যাটা গোপন রেখে চলেছে বলে চিনকে একহাত নিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

Advertisement

অ্যামনেস্টির পূর্ব এশিয়ার অধিকর্তা নিকোলাস বেকেলিন বলেছেন, ‘‘২০১৫ সালের নিরিখে যখন গত বছরে গোটা বিশ্বে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার ঘটনা কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে, তখন মৃত্যদণ্ড কার্যকর করার ঘটনায় এখনও তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইরান, সৌদি আরব, ইরাক ও পাকিস্তান। আর ফি-বছর নির্বিচারে চিনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও বেজিং তা গোপন রেখে চলেছে।

অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, বিশ্বের ২৫টি দেশে ২০১৫-য় ১ হাজার ৬৩৪টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল। গত বছর ওই দেশগুলিতে সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৩২ জনে। আর চিনে ফি-বছর অন্তত এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যানে তা কমিয়ে দেখানো হয়। বেজিংকে মনে রাখতে হবে, এ ভাবে গোটা বিশ্বের চোখে দুষ্ট রাষ্ট্র হয়ে গিয়েছে চিন। চিনে ৯৯.৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই কার্যকর হয় মৃত্যুদণ্ড। জেলে অপরাধীদের ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। চিন সরকার বলছে বটে সে দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে, কিন্তু আদত ঘটনা তা নয়। নির্বিচারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে চিনে। চিনের দেওয়া সরকারি পরিসংখ্যানকে কোনও দেশই বিশ্বাস করে না। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদগুলিকেও উপেক্ষা করে চলেছে বেজিং। কোনও স্বচ্ছতার বালাই না রেখে। ২১ বছর আগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এক অপরাধীকে গত বছর ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে মেরে ফেলা হয়।’’

Advertisement

অ্যামনেস্টির চিন গবেষক উইলিয়াম নী বলেছেন, ‘‘চিন আদত সংখ্যাটা (মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের) ঘোষণা করে নিজেকে বিশ্বের কাছে অপদস্থ করতে চাইছে না। কিন্তু সেখানে যেটা হচ্ছে, তা আসলে মানবাধিকার লঙ্ঘনই। চিনে ৪৬ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। অথচ, সন্ত্রাসবাদের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অপরাধে চিনে মৃত্যুদণ্ড তেমন ভাবে দেওয়া হয় না। সেই অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় শুধুই তুরস্ক থেকে আসা মুসলিম অধ্যুষিত উত্তর পশ্চিম চিনের জিনজিয়াংয়ে।

১৯২১ সালে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠার পর ঘোষণা করা হয়েছিল, মৃত্যুদণ্ড বা তা কার্যকর করার ঘটনা কমানো হবে। কিন্তু তা তো দূর অস্তই, ১৯৪৯ সালে পার্টি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে আকছারই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে থাকে চিনে। ২০ বছরে ৭ লক্ষ ১২ হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় চিনে।’’

অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, গত বছর ইরানে ৫৬৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। সৌদি আরবে ১৫৪ জন ও ইরাকে ৮৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আর আমেরিকায় গত বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে মাত্র ২০ জনের। যা গত ২৫ বছরে সবচেয়ে কম।

আরও পড়ুন- ফাঁসি দেওয়ার ফল কী হবে, ভেবে নিক পাকিস্তান: চরম হুঁশিয়ারি সুষমা স্বরাজের

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement