প্রতীকী ছবি।
প্রতিনিয়ত চাপ বাড়াচ্ছে চিন। লাগাতার দখলের হুমকি। অদূর ভবিষ্যতে হংকংয়ের মতো পরিণতি হতে পারে তাদেরও। সেই আশঙ্কাতেই এখন ঘুম উড়েছে তাইওয়ান প্রশাসনের— মার্কিন স্বাস্থ্যসচিব অ্যালেক্স আজ়ারের কাছে মঙ্গলবার এই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন তাইওয়ানের বিদেশমন্ত্রী জোসেফ উ। যার জেরে আরও এক বার প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতি চিনের আগ্রাসী নীতির দিকে সরাসরি আঙুল উঠল।
তিন দিনের কূটনৈতিক সফরে রবিবার তাইওয়ানে গিয়েছেন মার্কিন স্বাস্থ্যসচিব। চিনের চোখরাঙানির শিকার হতে হচ্ছে তার আগে থেকেই— সুর চড়াচ্ছিল তাইওয়ান। সেই দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আজ়ারের বৈঠকের আগে চিন-তাইওয়ান সীমান্তবর্তী তাইওয়ান প্রণালীর উপরে বেশ কয়েকটি চিনা যুদ্ধবিমানকে ঘুরতে দেখা যায় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে গত কাল।
আজ তাইওয়ানে দাঁড়িয়ে চিনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন মার্কিন স্বাস্থ্যসচিবও। করোনা অতিমারি পরিস্থিতির পিছনে চিনই দায়ী, এই দাবি করে আজ়ার বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির প্রাদুর্ভাব যদি তাইওয়ান বা আমেরিকা থেকে হত, তা হলে গোড়া থেকেই এর মোকাবিলা অনেক দায়িত্বশীল ভাবে করা হত। চিন সেই দিক থেকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’’ পাশাপাশি এই ভাইরাস-হানার বিষয়টি গোটা বিশ্বের কাছে লুকোনোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘‘বেজিং করোনা নিয়ে বিশ্বকে আগেই সতর্ক করতে পারত, পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য সাহায্য চাইতে পারত, তবে তারা তা প্রয়োজন মনে করেনি। যার খেসারত এখন দিতে হচ্ছে গোটা বিশ্বকে।’’
১৯৭৯ সালের পর থেকে তাইওয়ানের সঙ্গে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখেনি আমেরিকা। তৎকালীন পরিস্থিতিতে চিনের পক্ষ নিয়েই এই পদক্ষেপ করেছিল তারা। তবে ইদানীং চিন-আমেরিকা সম্পর্কের অবনতির পরে সেই চিত্র বদলেছে। তাইওয়ান চিনেরই অংশ বলে বরাবরের দাবি বেজিংয়ের। প্রয়োজনে জোর খাটিয়েই তাইওয়ানকে নিজেদের শাসনে আনার হুমকি দিয়ে আসছে চিন। সেই আবহে তাইওয়ানকে ‘দলে টানতে’ মার্কিন স্বাস্থ্যসচিবের এই ‘ঐতিহাসিক’ সফরের পরোক্ষ যোগ রয়েছে বলে মত কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
অন্য দিকে, হংকংয়ের স্বায়ত্বশাসন ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনরত নাগরিকদের উপর চিনের দমন-নীতি অব্যাহত। নয়া নিরাপত্তা আইনে একের পর এক গ্রেফতার করা হচ্ছে প্রতিবাদীদের। সেই তালিকায় এ বার জুড়ল আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা ২৩ বছর বয়সি অ্যাগনেস চাউ-এর নাম। হংকংয়ে তাঁর ফ্ল্যাট থেকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ— সোমবার রাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই ছবি।