ভারতের সীমান্তে চিন সেনা বাড়াচ্ছে বলে পেন্টাগন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তার তীব্র নিন্দা করল চিন। আমেরিকার এই রিপোর্টে ‘পারস্পরিক বিশ্বাস’ প্রবল ধাক্কা খেয়েছে বলে মন্তব্য করেছে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। আমেরিকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিকৃত রিপোর্ট পেশ করেছে বলেও বেজিং-এর দাবি।
দিন তিনেক আগেই মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আব্রাহাম এম ডেনমার্ক বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে ভারতের সীমান্তের কাছাকাছি বিভিন্ন এলাকায় চিন সৈন্য সংখ্যা এবং সামরিক পরিকাঠামো বৃদ্ধি করছে।’’ পুরো পরিস্থিতির উপর আমেরিকা সতর্ক নজর রাখছে বলেও আব্রাহাম মন্তব্য করেন।
সোমবার চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়াতে সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হয়েছে। চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, পেন্টাগনের এই রিপোর্ট ‘পারস্পরিক বিশ্বাসের সাংঘাতিক ক্ষতি করেছে।’ কূটনৈতিক পরিভাষায় যে ধরনের বয়ানকে কঠোর বলে মনে করা হয়, ঠিক সেই ধরনেরই বয়ান দিয়ে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, আমেরিকার রিপোর্টে ‘কঠোর অসন্তোষ’ প্রকাশ করা হচ্ছে। বেজিং আরও বলেছে, আমেরিকা চিনের সমরসজ্জাকে ইচ্ছাকৃত বাড়িয়ে দেখাচ্ছে এবং প্রমাণ করতে চাইছে চিনের নীতি অস্বচ্ছ। চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে মুখপাত্র ইয়াং ইয়ুজুন বলেছেন, আমেরিকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে চিনের প্রতিরক্ষা নীতিকে বিকৃত করে দেখিয়েছে এবং চিনের গতিবিধি সম্পর্কে মিথ্যা চিত্র তুলে ধরেছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের সখ্য যে ক্রমশ বাড়ছে, তা সকলের কাছেই স্পষ্ট। অন্য দিকে এও স্পষ্ট যে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়ছে আমেরিকার। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমীকরণ যা-ই হোক, চিন যে কিছুতেই ভারতের মতো প্রতিবেশীর সঙ্গে সামরিক সঙ্ঘাতে এই মুহূর্তে জড়াতে চায় না, চিনের কড়া প্রতিক্রিয়া তারই প্রমাণ। বেজিং তার বিবৃতিতে এটাই বোঝাতে চেয়েছে যে আমেরিকা যা-ই বলুক, ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোর বা ভারতকে আক্রমণ করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। ইয়াং ইয়ুজুন বলেছেন, ‘‘চিনের জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি হল রক্ষণাত্মক নীতি। নিজের দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক সংহতি রক্ষার লক্ষ্যেই চিনের সেনা কাজ করে।’’ ইয়ুজুন বোজাতে চেয়েছেন, নিজেরা আক্রান্ত না হলে কারও সঙ্গে আগ বাড়িয়ে যুদ্ধ করতে যাওয়ার চিনের নীতি নয়।
আরও পড়ুন:
চিনের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে অগ্নি-৬ ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে ভারত
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত-আমেরিকার ক্রমবর্ধমান মৈত্রী দেখে খুব একটা স্বস্তিতে থাকতে পারছে না বেজিং। তার মধ্যে পেন্টাগনের রিপোর্ট ভারতের সঙ্গে চিনের তিক্ততা আরও বাড়াতে পারে বলে বেজিং-এর আশঙ্কা। তাই এত কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে আমেরিকার রিপোর্টকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিল চিন। বলছে ওয়াকিবহাল মহল।