জো বাইডেন এবং শি চিনফিং। —ফাইল চিত্র।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শোধরানোর লক্ষ্যে গত সপ্তাহে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ভিডিয়ো বৈঠক করেছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাইওয়ান বা হংকংয়ে চিনা আগ্রাসনের প্রসঙ্গে সেখানে দু’পক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হলেও বিশ্বের দুই অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ হিসাবে দু’দেশকেই আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে বলে বার্তা দিয়েছিলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। এ বার প্রায় একই সুর শোনা গেল আমেরিকায় নিযুক্ত চিনা দূতের গলায়। শিন গ্যাং নামে ওই দূত জানিয়েছেন, চিন ও আমেরিকার এখন উচিত খোলাখুলি ভাবে ঠান্ডা যুদ্ধের মনোভাব সরিয়ে রেখে একে অপরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানো। চিনা সরকারি সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া তাদের এক রিপোর্টে এ কথা জানিয়েছে।
খুব সম্প্রতি একটি আমেরিকান গবেষণা সংস্থার অনলাইন সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন চিনের ওই দূত। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘তিরিশ বছর হয়ে গেল ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন দু’দেশেরই উচিত ভাবাদর্শগত ভাবে দ্বিপাক্ষিক দ্বন্দ্ব দূরে সরিয়ে রাখা। সময়ের ধারা মেনে আমাদের এখন উচিত বিশ্বের মানুষের জন্য ভাবা এবং শান্তির পৃথিবী তৈরির জন্য একসঙ্গে পথ চলা।’’ একই সঙ্গে শিন জানিয়েছেন, চিন আর আমেরিকার এখন উচিত পারস্পরিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বাড়ানো। তাঁর কথায়, ‘‘দু’দেশই নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি ভাল ভাবেই সামলায়। এ বার তাদের আরও বেশি করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হতে হবে।’’
শি-বাইডেনের বৈঠকের পরেও প্রায় একই বার্তা দিয়েছিলেন চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান। বেজিংয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘চিন ও আমেরিকার সম্পর্ক এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। বেজিং আশা করছে যে, দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বৈঠকে যে যে বিষয়ে একমত হয়েছেন, তা বাস্তাবিয়ত করতে ওয়াশিংটনও সদর্থক
পদক্ষেপ নেবে।’’
বস্তুত ট্রাম্প-আমলে চিনের সঙ্গে বাণিজ্য-যুদ্ধ দু’দেশের সম্পর্ক প্রায় তলানিতে নিয়ে গিয়েছিল। কোভিড-১৯-এর উৎস চিনই কি না তা জানতে ডোনাল্ড ট্রাম্প তদন্ত শুরু করানোয় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। তবে গত জানুয়ারি মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের গদিতে বসার পর থেকেই চিনের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর বার্তা দিয়েছেন জো বাইডেন। শি-ও গত মঙ্গলবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে বাইডেনকে ‘আমার পুরনো বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছিলেন।