সাইবার হানায় লুট ৫০০ কোটি
Cambodia

কম্বোডিয়ায় ‘আটক’ ভারতীয়দের উদ্ধারে উদ্যোগী নয়াদিল্লি

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৭:৪৯
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

সম্প্রতি জোর করে বেশ কিছু ভারতীয়কে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। সে দেশের নানা প্রান্তে আটকে থাকা সেই সব ভারতীয়কে উদ্ধারে ইতিমধ্যেই সচেষ্ট ভারত সরকার। এর মধ্যেই ফের জানা গিয়েছে, আরও একটি দেশে নিজেদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে ‘আটকে’ রাখা হয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে। কম্বোডিয়ায় আটক সেই সব ভারতীয়ও দেশে ফেরার আর্জি জানিয়েছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। আপাতত তাঁদের কী ভাবে দেশে ফেরানো যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে মোদী সরকার।

Advertisement

একটি সর্বভারতীয় দৈনিক তাদের এক রিপোর্টে দাবি করেছে, চলতি মাসের গোড়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বেশ কিছু আধিকারিক বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে কয়েক জন প্রযুক্তিবিদের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছিলেন।

ওই রিপোর্ট থেকে আরও জানা গিয়েছে, ডেটা এন্ট্রির কাজ করার টোপ দিয়ে প্রচুর ভারতীয় নাগরিককে গত কয়েক মাস ধরে কম্বোডিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। সেখানে পৌঁছনোর পরে তাঁদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্টগুলি। এর পরে তাঁদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁদের দিয়েই এ দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের উপরে সাইবার হানার কাজ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

এ ভাবে গত ছ’মাসে ভারতীয়দের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কম্বোডিয়া থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ওই দৈনিকটি।

কাজের টোপ দিয়ে যে সব ভারতীয়কে কম্বোডিয়ায় পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা। সম্প্রতি কম্বোডিয়া থেকে দেশে ফিরতে পেরেছেন সেখানে আটকে থাকা বেঙ্গালুরুর তিন বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে এক জনের নাম স্টিফেন। তিনি জানিয়েছেন, রাম বাবু নামে অন্ধ্রপ্রদেশের এক বাসিন্দা কম্বোডিয়ায় আটকে রয়েছেন। বাকি কাউকে তিনি চেনেন না। স্টিফেন আরও জানিয়েছেন, ডেটা এন্ট্রির কাজ করার লোক লাগবে বলে তাঁকে কম্বোডিয়া পাঠিয়েছিলেন মেঙ্গালুরুর এক ব্যক্তি। ওখানে তাঁর ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। সেখানে টাইপিং স্পিড দেখা হয় তাঁর। করা হয় কিছু ছোটখাট প্রশ্নও। কয়েক দিন পরে তাঁকে বলা হয়, বিভিন্ন ভারতীয়ের ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে ঘেঁটে তালিকা বানানোই হল তাঁর কাজ। যাঁদের সাইবার প্রতারণার ফাঁদে ফেলা সহজ হবে, এমন সব ভারতীয়কে সবার আগে ফাঁসানো হত বলে জানিয়েছেন স্টিফেন। কম্বোডিয়ায় বসে গোটা চক্রটা যারা চালাত, তারা চিনা বলে দাবি করেছেন স্টিফেন। চিনাদের বিভিন্ন নির্দেশ ইংরেজিতে তাঁদের কাছে অনুবাদ করে দিত মালয়েশিয়ার এক নাগরিক।

এই গোটা চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে খুব সম্প্রতি আট জনকে গ্রেফতার করেছে ওড়িশার রৌরকেলার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, গত বছর ডিসেম্বরে ভারত সরকারের উচ্চপদস্থ এক অফিসার অভিযোগ করেন, তাঁর থেকে সাইবার প্রতারণা করে ৭০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, খোঁজ খবর নিতে নিতে সাইবার প্রতারণার সিন্ডিকেটের খোঁজ পান তাঁরা। সাইবার হানায় জড়িত থাকার প্রমাণ-সহ প্রথমে গ্রেফতার করা হয় ৮ জনকে। এ ছাড়াও মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছিল লুকআউট নোটিস। সেই তালিকায় থাকা দু’জনকে সম্প্রতি হায়দরাবাদ বিমানবন্দর থেকে আটক করেছেন অভিবাসন দফতরের অফিসারেরা। আটক দু’জনের নাম হরিশ কুরোপতি এবং নাগা বেঙ্কট সৌজন্য কুরোপতি। কম্বোডিয়া থেকে ভারতে ফেরার পরপরই আটক করা হয় তাঁদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement