ফাইল চিত্র।
ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হওয়ায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরাহা হওয়া তো দূর, তাঁদের বিপদ বেড়েছে বলে মনে করেন সে দেশের মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা শাহরিয়ার কবির। সোমবার কলকাতায় একটি আলোচনা সভায় বক্তৃতার পরে প্রশ্নের জবাবে ঢাকার ‘ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’-র সভাপতি শাহরিয়ার বলেন, ‘‘এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এই পদক্ষেপের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম জড়ানো হয়েছে। এক জন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে বলতে পারি, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু-বৌদ্ধরা এই আইন সংশোধনের কোনও সুবিধা পাবেন না। বরং কোথাও কোথাও তাঁরা হুমকির শিকার হচ্ছেন বলে খবর এসেছে।’’
কবির জানান, বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে ধারাবাহিক নির্যাতনের ফলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেশছাড়ার প্রবণতা বেড়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তাতে রাশ পড়ে এবং এই প্রথম বাংলাদেশে আগের বছরের তুলনায় সংখ্যালঘুর সংখ্যা বেড়েছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে ভারতে সিএএ চালু হওয়ার পরে তাঁরা ঘর-সংসার ফেলে দলে দলে ভারতে চলে আসবেন, এটা ভাবা বাতুলতা। শাহরিয়ার বলেন, ‘‘বরং কোথাও কোথাও তাঁরা চাপেই পড়েছেন। যশোর ও কয়েকটি জায়গায় জমির হাঙরেরা সংখ্যালঘুদের বোঝাচ্ছে, সিএএ হওয়ার পরে ভারতে চলে যাও, ভাল ভাবে থাকতে পারবে!’’ ‘ইন্দো বাংলাদেশ ফোরাম ফর সেকুলার হিউম্যানিজম’ নামে অরাজনৈতিক এক সংগঠনের পথ চলার সূচনা হল এ দিন শহরিয়ারের হাতে।
‘ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: একটি পরম্পরা’ শীর্ষক আলোচনায় কবির বলেন, ‘‘প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম সিপাহি বিদ্রোহে শামিল হন সব ধর্মের মানুষ। তার পরেই ধর্মের বিভাজনে নামে ব্রিটিশ। যে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হয়, তার কবরের ওপর গড়ে ওঠে বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র বাংলাদেশ।’’ ইতিহাসবিদ সুস্নাত দাশ বলেন, ‘‘দেশ ও প্রতিবেশীদের ইতিহাস সম্পর্কে ভারতের শাসকদের ভুল ধারণা তাদের বিদেশ নীতিতেও প্রকট। সিএএ-র ভ্রান্তি উপমহাদেশ জুড়ে অস্থিরতা ডেকে এনেছে।’’