International News

‘প্রয়োজন ছিল না’, সিএএ নিয়ে ক্ষোভ গোপন রাখলেন না শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারিনি ভারত সরকার কেন এটা (সিএএ) করল।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আবু ধাবি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৩২
Share:

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র

এ রাজ্যে তথা দেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) চালু হলে তার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। সেটা বুঝেও এত দিন সরাসরি এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী। এ বার মুখ খুলেও সাবধানী শেখ হাসিনা। সিএএ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও নিজের ক্ষোভ গোপন রাখলেন না তিনি। আবু ধাবিতে সংবাদ মাধ্যমকে হাসিনা বললেন, ‘‘এই আইনের প্রয়োজন ছিল না।’’ ভারত থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিরে যাওয়ার বিষয়টিও উড়িয়ে দিলেন আওয়ামী লিগ শীর্ষনেত্রী।

Advertisement

সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) পাশ হয়েছে ১১ ডিসেম্বর। তার পর এক মাসেরও বেশি সময়ের পরে ভারত সফরে এসেছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। দিল্লিতে তিনি বলেছিলেন, সিএএ-এনআরিসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে একই সঙ্গে এও বলেছিলেন, ভারতে কোনও অস্থিরতা তৈরি হলে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য।

কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা দেশে এত দিন এ নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। এ বার মুখ খুললেন সংযুক্তি আরব আমিরশাহি সফরে গিয়ে। সেখানে সংবাদ মাধ্যমে তাঁর ক্ষোভ ব্যাক্ত করে বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারিনি ভারত সরকার কেন এটা (সিএএ) করল। এর কোনও প্রয়োজনই ছিল না।’’ তবে এটা যে ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ সেটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা হাসিনা।

Advertisement

আরও পডু়ন: ভারতে বোমা ফেলেছিলেন, তাঁর ছেলে আদনান সামিকে নাগরিকত্ব দিয়েছেন! সিএএ-র বিরুদ্ধে সরব রাজা মুরাদ

অসম এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ এবং সম্প্রতি সিএএ পাশের জেরে ভারতে আসা বাংলাদেশিরা দলে দলে দেশে ফিরছেন বলে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। আবার বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র প্রধানও দিল্লিতে এসে জানিয়েছিলেন, ২০১৯ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মোট ৩০০ জন ধরা পড়েছেন। তাঁরা কাজের খোঁজে বা অন্য প্রয়োজনে ভারতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁদের কোনও বৈধ নথিপত্র ছিল না।

হাসিনাকেও সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু তাঁরই সরকারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দেওয়া সরকারি তথ্য কার্যত অস্বীকার করে হাসিনা বলেন, বিপরীত অনুপ্রবেশের (ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া) কোনও নজির নেই। তবে ভারতের মধ্যেই বহু মানুষ নানা সমস্যায় ভুগছেন।’’

আরও পড়ুন: সিএএ: শীতের রাতে প্রতিবাদীদের কম্বল কেড়ে নিল যোগীর পুলিশ

তবে একই সঙ্গে হাসিনা এ দিন বলেন, বাংলাদেশ সব সময়ই এটা মনে করে যে সিএএ-এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকারও সেটাই মনে করে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে আমার দিল্লি সফরের সময়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে সেই আশ্বাস দিয়েছিলেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বর্তমানে নয়াদিল্লি-ঢাকা পারস্পারিক বোঝাপড়ার সম্পর্ক সবচেয়ে ভাল জায়গায় রয়েছে।’’

গত বছরের অক্টোবরেও (তখনও নাগরিকত্ব বিল পাশ হয়নি) এনআরসি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনের ফাঁকে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের কথা হয়েছিল। তখন হাসিনা মোদীকে বলেছিলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে এনআরসি তাঁদের কাছে ‘গভীর উদ্বেগের’। তবে মোদী তখনও আশ্বস্ত করেছিলেন যে দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু তার পরেও হাসিনার ক্ষোভ-উদ্বেগ যে পুরোপুরি মেটেনি, কার্যত সেই কথাই আরও এক বার তুলে ধরলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। যদিও মোদীর আশ্বাসে তিনি আশ্বস্ত কি না, সে প্রশ্নে তিনি এ দিনও বলেন, ‘অবশ্যই’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement