গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার
আফগানিস্তানের তালিবান সরকার-বিরোধী নেতাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ভারতের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট হিজেব-ই-ইসলামি গেরিলা গোষ্ঠীর প্রধান গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার। তালিবান সরকারে অংশ না নিলেও তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে আগেই বার্তা দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা এই ‘কুখ্যাত’ যুদ্ধপতি। নয়া তালিবানি শাসনের বিরুদ্ধে ভারত যদি কোনও ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে’ সামিল হয়, তবে তা নয়াদিল্লির পক্ষে মোটেই সুখকর হবে না বলে এ বার হুঁশিয়ারি দিলেন হেকমতিয়ার।
তালিবরা কাবুল দখল করার পর প্রাণ বাঁচাতে বহু আফগান সাংসদ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘পরবর্তী আফগান সরকার বিরোধী নেতাদের ভারত যদি রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় এবং সেই সব নেতা যদি ভারতের মাটিকে থেকে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তবে তালিবানও কিন্তু পাল্টা জবাব দেবে।’’
বিগত চার দশক ধরে আফগানিস্তানের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হেকমতিয়ার। ঠান্ডা লড়াইয়ের সময়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়া আমেরিকার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুজাহিদিন বাহিনীর অংশ ছিলেন তিনি। আল কায়দার প্রতি তাঁর অটুট সমর্থনের জন্য ৯/১১ হামলার পর তাঁকে আন্তর্জাতিক জঙ্গির তকমা দিয়েছিল ওয়াশিংটন। ২০০১ সালে আমেরিকার সেনা আফগানিস্তানের মাটিতে পা রাখার পরই হেকমতিয়ার পাকিস্তানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। শোনা যায়, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে কাবুল বহু সাধারণ নাগরিককে খুন করেছিলেন তিনি। আফগানিস্তানের রাজনীতিতে ‘কাবুলের কসাই’ বলেই পরিচিত হেকমতিয়ার। দীর্ঘ দিন পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সাহায্য নিয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর ২০১৭ সালে তৎকালীন গনি সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে কাবুলে ফিরে এসেছিলেন তিনি। আরও শোনা যায়, আমেরিকার সেনা আফগানভূম ছাড়ার পর থেকে কাবুল দখলের প্রক্রিয়ায় তালিবানকে নানা ভাবে সাহায্য করেছিলেন এই নেতা।
তালিবানি শাসনে ভারত ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আফগানিস্তানে সাবেক সোভিয়েত আর আমেরিকার আগ্রাসনকে ভারত বরাবর সমর্থন করে এসেছে। এই কাবুল-নীতি এ বার বদলানো উচিত ভারতের। দীর্ঘ চার দশকের এই ভুল শুধরে গোটা পরিস্থিতি নতুন করে বিবেচনা করুক নয়াদিল্লি।’’