এমনই হবে কভেন্ট্রি শহরের ‘এয়ার-ওয়ান’। ছবি: আরবান এয়ারপোর্ট
যানজট এড়ানোটা লক্ষ্য ছিলই। ‘ফ্লাইং কার’ বানাতে গিয়ে হালে পরিবেশবান্ধব হওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ ও গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা। জাপান, স্লোভাকিয়া, রাশিয়া— যে যার নিজের মতো করে বিদ্যুৎচালিত উড়ন্ত গাড়ি তৈরির ম্যারাথনে কার্যত শেষ ল্যাপে। কিন্তু এয়ারপোর্ট কই? নাকি, যে যাঁর নিজের বাড়ির ছাদ থেকেই গাড়ি নিয়ে পাড়ি দেবে আকাশে! না, ব্রিটেন জানাল— তারা তৈরি। নভেম্বরেই কভেন্ট্রি শহরে আমজনতা দেখবে সেই এয়ারপোর্ট।
বিশ্বের সব চেয়ে ছোট বিমানবন্দর— তবে বিমান নয়, ওঠা-নামা করবে শুধুই ফ্লাইং কার। ব্রিটেনের স্টার্ট-আপ সংস্থা ‘আরবান এয়ারপোর্ট’-এর সঙ্গে এই প্রকল্পে শামিল দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্ডাই মোটর। ১২ লক্ষ পাউন্ডের সরকারি অনুদানও জুটেছে। স্টার্ট আপ সংস্থাটির দাবি, তারাই প্রথম এই ধরনের সম্পূর্ণ এয়ারপোর্ট আনছে বিশ্বে। নাম, এয়ার-ওয়ান। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রিকি সাঁধু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘সরকারি সাহায্য আর হুন্ডাইয়ের পাশে দাঁড়ানোতেই আমরা আজ এতখানি আত্মবিশ্বাসী। ’’ যাত্রিবাহী ড্রোন কিংবা পণ্যবাহী ছোট গাড়ি ল্যান্ডিং প্যাড থেকে কী ভাবে ওঠা-নামা করবে, সব ব্যবস্থাই প্রায় তৈরি বলে জানান তিনি।
একাংশ উচ্ছ্বসিত হলেও, এই জাতীয় এয়ারপোর্ট তৈরির পিছনে সরকারও খরচ করছে জেনে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি নেটিজ়েনের একাংশ। এক জন যেমন টুইটারে তোপ দাগলেন— ‘‘১২ লক্ষ পাউন্ড!! সত্যি? এই অর্থ তো স্কুলশিক্ষাতেও বরাদ্দ করা যেত!’’ কেউ এর সঙ্গে কোভিড-বরাদ্দের তুলনা টেনে তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে।
‘আরবান এয়ারপোর্ট’ স্টার্ট আপ সংস্থাটি তবু এ সবে কান দিতে নারাজ। রিকির কথায়, ‘‘দু’তিন বছর ধরেই উড়ুক্কু যান তৈরি বলে খবর পাচ্ছি নানা দেশ থেকে। কিন্তু যথাযথ এয়ারপোর্ট নিয়ে কোনও কথাই হচ্ছিল না। স্টেশন ছাড়া ট্রেনে ওঠা-নামা করবেন কী করে? সাপোর্টিং গ্রাউন্ড পরিকাঠামোটা তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরাই নজির তৈরি করে দেখাব দুনিয়াকে।’’
একটা সময় পর্যন্ত ফ্লাইং কার শুধু কল্পবিজ্ঞানেরই অংশ ছিল। গত বছরই নিজেদের তৈরি উড়ন্ত যানে এক যাত্রীকে নিয়ে সফল পরীক্ষা করেছে জাপানের স্কাইড্রাইভ ইনকর্পোরেশন। ২০২৩-এর মধ্যেই বাজারে এই গাড়ি আনবে বলে জানিয়েছে তারা। স্লোভাকিয়ান একটি সংস্থাও ৩০ বছরের পরিশ্রমে এমন একটি গাড়ি (এয়ারকার) তৈরি করেছে যা চোখের পলকে বদলে যাবে বিমানে। ।
এরই মধ্যে বন্দর-সুখবর এল ব্রিটেন থেকে। পপ-আপ জাতীয় গাড়ি-বন্দর। যাতে থাকবে ছোট রানওয়ে আর ১৪ মিটার ব্যাসার্ধের ল্যান্ডিং প্যাড। গাড়ি আকাশ থেকে নেমে প্যাড ছুঁলেই স্বয়ংক্রিয় ভাবে তা ঢুকে যাবে বন্দরের অন্দরে। কভেন্ট্রি শহরের প্রাণকেন্দ্রে রিকো এরিনা স্টেডিয়াম লাগোয়া একটি পার্কিং লটকে বদলে এটি তৈরি করা হচ্ছে। আবার প্রয়োজন মতো অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থাও রয়েছে এই মোবাইল এয়ারপোর্টের।