প্রতীকী ছবি।
বর্ণবৈষম্যের নিরিখে বাকি শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত দেশগুলির সামনে ব্রিটেন এক উদাহরণ— ‘কমিশন অন রেস অ্যান্ড এথনিক ডিসপ্যারিটি’-র এই সংক্রান্ত এক রিপোর্টের এই দাবি ঘিরে শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে সরব বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনকারীরা। তাঁদের পাল্টা দাবি, এই রিপোর্ট ভিত্তিহীন। এর বয়ান কৃষ্ণাঙ্গ এবং অ-শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের কাছে ‘অত্যন্ত অপমানজনক’।
যদিও নিজের বাসভবনে দাঁড়িয়ে রিপোর্টটির বিধানকে উচ্ছ্বসিত ভাবে স্বাগত জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাঁর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলন ‘ব্ল্যাক লাইভ্স ম্যাটার’ ঘিরে আমেরিকা উত্তাল হওয়ার কিছু দিন পর-পরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই সমীক্ষা রিপোর্টটি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বর্ণবিদ্বেষের বিরোধী আন্দোলনকারীরা যদিও এই রিপোর্টের পিছনে কোনও যুক্তিই দেখছেন না। তাঁদের মতে ২৬৪ পাতার এই রিপোর্টটি ‘খুবই বিরক্তিকর’। গায়ের রঙের ভিত্তিতে বৈষম্য যে ব্রিটেনে কতটা প্রখর, তা বোঝাতে অতিমারি পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টানছেন তাঁরা। এই সঙ্কটের সময়ে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে তাঁদের প্রশ্ন, বৈষম্য যদি না-ই থাকে, তা হলে এমনটা কেন?
এর জবাবে কমিশন অন রেস অ্যান্ড এথনিক ডিসপ্যারিটির চেয়ারম্যান টনি সিওয়েলের অবশ্য যুক্তি, ‘‘বর্ণবৈষম্য যে এ দেশে একেবারে নেই, তেমনটা তো বলা হয়নি। বলা হচ্ছে, থাকলেও তা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নয় অন্তত। তেমন কোনও দৃষ্টান্ত আমাদের নজরে নেই।’’ রিপোর্টটির সারসংক্ষেপেও অবশ্য বর্ণবিদ্বেষের অস্তিত্বের কথা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। সেখানকার বয়ান অনুযায়ী, বৈষম্য থাকলেও বাকি ‘শ্বেতাঙ্গ দেশগুলিতে’ যা পরিস্থিতি তার তুলনায় ব্রিটেনের অবস্থা অনেকটাই ভাল। সে প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে ব্রিটেনকে অনায়াসে ‘মডেল’ বলাই যায় বলে দাবি করা হয়েছে সেখানে।
বরিসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ডাউনিং স্ট্রিটের পলিসি ইউনিটের প্রধান মুনিরা মির্জ়াই কমিশনের সদস্যদের মধ্যে থেকে এই রিপোর্টটির সমীক্ষকদের নির্বাচন করেছেন। তাঁর বরাবরের বক্তব্য, ব্রিটেনে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে বর্ণবিদ্বেষের অস্তিত্ব নেই। সেই কথা তুলে ধরে আন্দোলনকারীদের একাংশের দাবি, আসল সত্যিটা নয়, এই রিপোর্ট আদতে মুনিরার মুখের কথাই তুলে ধরেছে!