লেলিহান: তখনও জ্বলছে ব্রাজিলের জাতীয় সংগ্রহশালা। রিও ডি জেনেইরোতে। ছবি: এএফপি।
বিধ্বংসী আগুনে রবিবার ভস্মীভূত হয়ে গেল ব্রাজিলের জাতীয় সংগ্রহশালা।
রবিবার সন্ধে ৭টা নাগাদ আগুন লাগে দেশের অন্যতম প্রাচীন এই জাদুঘরে। আকাশছোঁয়া ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল চারপাশ। খবর পেয়েই ছুটে আসে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন।
তাদের তৎপরতায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবু আগুন সম্পূর্ণ ভাবে নেভাতে আরও অনেকটাই সময় লেগে গিয়েছিল। আর তার আগেই ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায় বলে স্থানীয় প্রশাসন তরফে জানা গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট মিশেল টেমের এ দিন বলেন, ‘‘দেশের জ্ঞান এবং ঐতিহ্যের ভয়াবহ ক্ষতি হয়ে গেল।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার সে সময়ে মারাকানা স্টেডিয়ামের কাছের ওই জাদুঘরটি বন্ধ ছিল। আগুন লাগার কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে কোনও দাহ্য বস্তু যে সেখানে মজুত ছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত বলেই জানিয়েছেন দমকল কর্তৃপক্ষ। আর সে সব থেকেই এ দিন দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল বলেও দাবি তাঁদের।
১৮১৮ সালে রাজা ষষ্ঠ জোয়াও প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরটি নিজেই ইতিহাসের স্মারক। এক সময়ে পর্তুগিজ রাজপ্রাসাদ ছিল সেটি। গোটা পৃথিবীর অন্তত ২ কোটি মূল্যবান সংগ্রহ রয়েছে এখানে।
প্রেসিডেন্ট টেমের আরও বলেন, ‘‘দুই শতকের বিপুল ঐতিহাসিক সংগ্রহ, গবেষণা— এ দিনের আগুনে সবই হয়তো পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ জাদুঘরে রয়েছে গ্রীক-রোমান সময়ের বহু শিল্পনিদর্শন, মিশরের বেশ কিছু মূল্যবান সংগ্রহ। রয়েছে সম্প্রতি ব্রাজিল সীমান্ত থেকে পাওয়া প্রাচীনতম মানব জীবাশ্ম ‘লুজ়িয়া’। ৫.৩ টনের একটি উল্কাপিণ্ড পাওয়া গিয়েছিল ব্রাজিলে। সেটিও রয়েছে ওই জাদুঘরে। রয়েছে একটি ডাইনোসরের কঙ্কালও।
জাদুঘরের ডেপুটি ডিরেক্টর লুইজ় ফার্নান্দো দিয়াজ় দুয়ার্তে অবশ্য গোটা ঘটনার জন্য প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলেছেন। এ দিন তিনি জানিয়েছেন, প্রশাসনের গাফিলতির জন্যই এই অঘট। তাঁর অভিযোগ, এক সময়ের পর্তুগিজ রাজাদের ঠিকানা ওই প্রাসাদের রক্ষণাবেক্ষণের দিকে কখনওই নজর দেয়নি সরকার।