বরিস জনসন।
রাজকীয় খেতাব ছেড়ে দিচ্ছেন হ্যারি-মেগান, ঘোষণা হয়ে গিয়েছে গত কালই। আজ তাঁদের ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানালেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বার্লিনের এক সম্মেলন থেকে বরিস বলেছেন, হ্যারি-মেগানের জন্য রাজপরিবার ঠিক একটা পথ বার করে দেবে, এ ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, গোটা দেশ ওঁদের একযোগে ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানাতে চায়।’’
মেগানের বাবা টমাস মার্কল অবশ্য ফের আঙুল তুলেছেন মেয়ের দিকেই। তাঁর দাবি, গোটা প্রক্রিয়ায় রাজপরিবারেরই মর্যাদাহানি করেছেন মেগানেরা। মেগানের সঙ্গে তাঁর বাবার সম্পর্ক যদিও গোড়া থেকেই প্রশ্নের মুখে। সম্প্রতি একটি মামলার জেরে মেগানকে সাক্ষ্য দিতে ডাকা হতে পারে বলে জানিয়েছে একটি দৈনিক। তার মূল কারণ মেগানের তরফে বাবাকে লেখা একটি চিঠি ফাঁস হয়ে যাওয়া।
সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে ব্রিটেনের রাজপরিবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন হ্যারি এবং মেগান। যার ফলে ‘হিস অ্যান্ড হার রয়্যাল হাইনেস (এইচআরএইচ)’ উপাধি ছেড়ে দেবেন তাঁরা। গত কালই এই ঘোষণা হয়েছে। রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের প্রতিনিধিত্বও আর করবেন না এই দম্পতি। বাকিংহাম প্রাসাদ গত কাল এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘ডিউক এবং ডাচেস অব সাসেক্স এইচআরএইচ খেতাব ব্যবহার করবেন না, কারণ তাঁরা রাজপরিবারের কর্মরত সদস্য থাকছেন না।’ রানি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘হ্যারি, মেগান আর আর্চি বরাবরই আমার পরিবারের প্রিয় সদস্য হিসেবে থাকবে। গত দু’বছরে ওঁদের যে ধরনের কড়া নজরদারির মধ্যে যেতে হয়েছে, তা আমি বুঝেছি। ওরা একটা স্বাধীন জীবন চায়, তাতে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’’ ব্রিটেন এবং কমনওয়েলথের জন্য এত দিন হ্যারি-মেগান যা কাজ করেছেন, তার জন্যও তাঁদের ধন্যবাদ দিয়েছেন রানি।
৩৮ বছর বয়সি মেগান সম্পর্কে আলাদা করে রানি বলেছেন, ‘‘মেগান খুব দ্রুত পরিবারের এক জন হয়ে উঠেছে। তার জন্য আমি গর্বিত। আমার গোটা পরিবারের আশা, এই চুক্তির পরে ওরা শান্তিপূর্ণ, সুখী জীবনযাপন করতে পারবে।’’ রানির প্রতিনিধিত্ব না করলেও বাকিংহাম প্রাসাদের তরফে জানানো হয়েছে, হ্যারিরা বলেছেন, রানির শেখানো মূল্যবোধই তুলে ধরার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
নিজেদের বাসস্থান, ফ্রগমোর কটেজ সংস্কার করতে গিয়ে যে ২৪ লক্ষ পাউন্ড খরচ হয়েছে, তা মিটিয়ে দিতে চান হ্যারিরা। ব্রিটেনে এলে এর পর থেকে ফ্রগমোর কটেজেই থাকবেন তাঁরা। আর তার জন্য ভাড়াও দেবেন।
হ্যারি আর মেগানের নতুন ওয়েবসাইট, ‘সাসেক্সরয়্যাল.কম’ আপডেট করে লেখা হয়েছে, ডিউক আর ডাচেস অব কেমব্রিজের ভূমিকা ও কাজ সংক্রান্ত তথ্য ক্রমশ জানানো হবে। মেগান আপাতত কানাডায় থাকলেও খুব অল্প সময়ের জন্য ব্রিটেনে ফিরতে পারেন। কারণ রাজপরিবার সংক্রান্ত তাঁর কিছু কাজ সারা বাকি। আর হ্যারিরও তেমনই কিছু দায়িত্ব পালন বাকি। মার্চের শেষ দিকে নতুন ভাবে কাজকর্ম শুরু হয়ে যাবে তাঁদের। তার আগে হ্যারি লন্ডনে আফ্রিকার নেতাদের সঙ্গে একটি সম্মেলনে যোগ দেবেন। তার পরে ধীরে ধীরে রাজ-দায়িত্ব ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন তিনি। রয়্যাল মেরিনে ক্যাপ্টেন জেনারেলের পদও ছেড়ে দেবেন হ্যারি। পাশাপাশি সাম্মানিক এয়ার কমান্ডান্ট এবং আরও একটি পদ ছাড়বেন তিনি।
তাঁদের এই সরে যাওয়াকে কেউ কেউ তুলনা করেছেন ব্রেক্সিটের সঙ্গে। আর তাই মেগানের নামের সঙ্গে টেনে একে বলা হচ্ছে, ‘মেক্সিট’। এর জেরে কমনওয়েলথের দূতের ভূমিকাও আর পালন করবেন না তাঁরা।