ট্রেনে চড়ে যেখানেই যান না কেন, টিকিট লাগবে না। কোনও কল্পকাহিনি নয়, এমনটাই বাস্তবে ঘটছে। তবে এ দেশে নয়, সুদূর নেদারল্যান্ডসে। গত ২৮ মার্চ থেকে পুরো এক সপ্তাহ এ সুবিধা পেলেন সে দেশের ট্রেনযাত্রীরা। কিন্তু, কেন জানেন?
বই পড়ায় উৎসাহ দিতে সেই ১৯৩২ সাল থেকেই নেদারল্যান্ডসে শুরু হয়েছিল সপ্তাহব্যাপী উৎসব ‘বোকেনউইক’। ডাচ শব্দ ‘বোকেন’এর অর্থ বই। ফি বছর এ উৎসবের অঙ্গ হিসেবে দেশ জুড়েই চলে নানা ধরনের সাহিত্য উৎসব। এমনকি প্রিয় বইয়ের পাতায় লেখকের স্বাক্ষরও পেয়ে যান সাহিত্যপ্রেমীরা।
‘বোকেনউইক’-এ নানা সুযোগসুবিধাও পাওয়া যায়। ধরুন, আপনি কোনও লাইব্রেরির সদস্য হলেন, তা হলে বিনামূল্যে একটা বই পেয়ে যাবেন। ‘বোকেনউইক’-এর কথা মাথায় রেখেই বিখ্যাত কোনও লেখক একটা বিশেষ উপন্যাস লেখেন। সেই বইটাই এ সময় নানা ভাবে বিনামূল্যেও বিতরণ করা হয় নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দাদের।
এ বছরে নেদারল্যান্ডসের বিখ্যাত লেখক ইয়ান সিবেলিঙ্কের উপন্যাস ‘ইয়াস ভ্যান বেলফ্ত’ দেশের প্রতিটি ট্রেনেই বিতরণ করা হয়েছে। কোনও যাত্রী যদি ওই বইটা চেকারকে দেখান, তবে তাঁর আর ট্রেনের টিকিট লাগেনি। অর্থাৎ একেবারে বিনা ভাড়ায় ট্রেনের সফর।
এই বার্ষিক উৎসবের স্পনসর হিসেবে এগিয়ে এসেছিল ডাচ স্টেট রেলওয়ে কোম্পানি। শুধু কি বই বিতরণ, ট্রেনের মধ্যেই ইয়ান সিবেলিঙ্কের বুক রিডিং-এর ব্যবস্থাও করেছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ।
শুধুমাত্র ট্রেনেই নয়, নেদারল্যান্ডসের যে কোনও বইয়ের দোকান থেকে সাড়ে ১২ ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৬৬টা)-তে বই কিনলেই ‘ইয়াস ভ্যান বেলফ্ত’ বিনামূল্যে পাওয়া গিয়েছে।
গোটা বিষয়ে উচ্ছ্বসিত লেখক ইয়ান সিবেলিঙ্ক। ট্রেনে চড়ে বুক রিডিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যাত্রীদের হাসিখুশি অবাক করা চেহারাগুলি দেখে যে কী ভাল লাগে!”
গত ১৮ বছর ধরেই এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে চলেছে ডাচ রেল সংস্থাটি।